গত কয়েকদিন ধরেই চর্চায় উঠে এসেছেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ছোটবেলা থেকে যার লেখা কবিতা পড়ে, গান শুনে বড় হয়েছে বাঙালি। নজরুলের বিখ্যাত গান ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ সম্প্রতি ব্যবহার করা হয়েছে হিন্দি ছবি ‘পিপ্পা’-তে। সুরকার এ আর রহমান গানটিতে নিজের মতো করে সুর দিয়েছেন। আর তাতে অস্কারজয়ী এই সংগীতকারের নামে লেগেছে সুর বিকৃত করার অভিযোগ। যদিও এই ব্যাপারে রহমান বা তাঁর টিমের তরফ থেকে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি এখনও।
পিপ্পা ছবির নির্মাতারা জানিয়েছেন চুক্তি-তে স্পষ্ট করেই বলা হয়েছিল সবটা। আর তারপরই কাজীর পরিবারের মধ্যেই লেগে গিয়েছে দ্বন্দ্ব। নজরুল-পৌত্র কাজী অরিন্দম এবং খিলখিল কাজীর দাবি, তাঁদের না জানিয়েই কবির গানের স্বত্ব বিক্রি করে দিয়েছে দাদা অনির্বাণ। একই মত তাঁর আর এক পৌত্রী, আমেরিকাতে থাকা অনিন্দিতা কাজীর।
কাজী নজরুলের দুই নাতি অরিন্দম এবং খিলখিল ১৬ নভেম্বর সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। খিলখিল থাকেন বাংলাদেশে, গান-বিতর্কের কারণেই এসেছেন কলকাতায়। সাংবাদিক বৈঠকে আরও ছিলেন অরিন্দমের স্ত্রী সুপর্ণা ভৌমিক এবং তাঁদের পুত্র-কন্যা অনুরাগ ও অভীপ্সা।
আর এখান থেকে দাদা অনির্বাণের নামে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন অরিন্দম। জানান, ১০ নভেম্বর থেকে তিনি দাদার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ফোন তোলেননি অনির্বাণ।
অরিন্দম বলেন, ‘আমি শুনেছি, দাদুর (কাজী নজরুল ইসলাম) পাওয়া সরকারি পুরস্কার নাকি বিক্রি করতে গিয়েছিলেন আমার দাদা। উনি জানিয়েছিলেন, নজরুলের একমাত্র উত্তরসূরি নাকি তিনিই। আমরা কি তা হলে আত্মা?’
সঙ্গে জানান, ‘দাদা অনির্বাণ এবং রায় কপূর ফিল্মস্ -এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ’ নেওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা।
অরিন্দম আরও বলেন, ‘আমার মা কল্যাণী কাজীর বয়স হয়ে গিয়েছিল ৮৬ বছর। দাদাকেই তাই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বৈষয়িক বিষয়গুলো দেখভালের। কিন্তু দাদা যে এমন করবে সেটা হয়তো মা-ও আশা করেননি।’
একই সঙ্গে এই সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই তিনি রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেন, অবিলম্বে যেন নজরুলের একটি সংগ্রহশালা তৈরি করা হয় কলকাতায়।
এদিকে অনির্বাণ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘মা গানটা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন সুর এবং কথা না বদলে রিক্রিয়েট করার জন্য। কিন্তু, সেই সময় ওদের তরফে বলা হয়েছিল, গানটা ওরা নিজেদের মতো করে ব্যবহার করতে চায়। মা ওদের বলেছিল, গানটা তৈরি হয়ে গেলে একবার শোনাতেও। ২০২১ সালে মা অনুমতি দেন। কিন্তু ওরা কিছুই শোনায়নি। এরপর মা-ও মারা যান।’