আধুনিক বাংলা গানের জগতের অন্যতম উজ্জ্বল নাম লোপামুদ্রা মিত্র। বাংলার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে চলতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। আজও মঞ্চে হিন্দি গান ধরেন না লোপা। লোপার গানের জীবনে হাতেখড়ি নব্বইয়ের দশকের গোড়ায়। তাঁর কেরিয়ারে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে একজন মানুষ, যাঁকে তিনি মনেপ্রাণে শ্রদ্ধা করনে। আজ সেই মানুষের জন্মদিন।
তিনি আর কেউ নন, বাঙালির গানওয়ালা কবীর সুমন। আজ ৭৫তম জন্মদিন কবীর সুমনের। বিশেষ দিনে প্রিয় শিল্পীকে নিয়ে খোলা চিঠি লোপামুদ্রার। তিনি জানালেন, কীভাবে তাঁর জীবন দর্শনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন কবীর সুমন। লোপা লেখেন, ‘সুমনদার গান প্রথম শুনি, DYFI এর একটি অ্যালবামে। সালটি বোধহয় ৯০। সেই থেকে মানুষটিকে মনে মনে ধাওয়া করা শুরু। মনে হল, হ্যাঁ, ঠিক এরকমই গান শুনতে চাইছিলাম যেন !! যেখানে সুমন, আমি আর কাকা পৌঁছে যাচ্ছি সেখানে। গান গাওয়ার , গানকে নিয়ে ভাবার নতুন দিক খুলে গেল আমাদের। নিজের গান , নিজের জীবন , বদলে গেল প্রতিটি পদক্ষেপ। স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম নতুন করে।’
খোলা চিঠিতে লোপা আরও যোগ করেন, ‘১৯৯৬, সে স্বপ্ন রূপ পেল আমাদের। সুমনদা যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সেদিন চৈত্রমাসে , আমার প্রথম সিনেমায় গান গাওয়া। ছোট বড় মিলে-তে, টুনটুনি আর বড়রা বড় বড় ভুল করে। গান কী করে গাইতে হয়, শব্দ কী করে উচ্চারণ করতে হয়, হ্যাঁ, শিখেছি এই মানুষটির কাছে।তুমি শুনোনা আমার কথা, বটের ঝুরি বেয়ে অন্ধকার নামে, নেচে ওঠ নিথর সময়। রবীন্দ্রসদনে আপনি পিয়ানো বাজালেন। ডুয়েট গাইলাম, আমি আপনি,মধুগন্ধে ভরা।’
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কবীর সুমনে মুগ্ধতা আরও গাঢ় হয়েছে লোপার। গায়িকার সংযোজন, ‘গিরিশে, আপনি গিটারে, ডেকে নিলেন আমাকে, গাইলাম তুমি শুনো না আমার কথা। শুধু একটা সত্যি কথা বলি, দূর থেকে ভালোবাসি আপনাকে। ভীষণ। কাছে যেতে ভয় পাই। খুব। চিরদিন, চিরকাল। এই দূরত্ব না থাকলে বাংলা গান আরও সমৃদ্ধ হত। এটা আমার আক্ষেপ, এটা বিশ্বাস আর খুব অভিমান। এতবার আপনার কাছে গেছি, কী অদ্ভুত, ছবি তোলা হয়নি। সব মনে তোলা আছে।’
কবীর সুমন মানেই বিতর্ক, কবীর সুমন মানেই বিপ্লব। তবে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করছেন ৭৫-এর তরুণ তুর্কি। বাঙালির 'সুর-পুরুষ' জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেকেই।