সিনেমার দুনিয়ায় বাংলা থেকে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন, এই সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। তবে এই জাতীয় পুরস্কারজয়ী ব্যক্তিত্বদের এখনও পর্যন্ত সেভাবে আলাদা কোনও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্মান জানানো হয়নি। তবে এবার সেটাই ঘটতে চলেছে। বাংলার জাতীয় পুরস্কার জয়ীদের সম্মান জানাতে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বাংলার জাতীয় গর্ব’।
জানা যাচ্ছে, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার বুকেই এক পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত হতে চলেছে এই সম্মাননা অনুষ্ঠান। সেখানে আমন্ত্রিত টলিপাড়ায় জাতীয় পুরস্কারজয়ীরা। এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়, মিঠুন চক্রবর্তী, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, রামকমল মুখোপাধ্যায়, ইমন চক্রবর্তী, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় সহ আরও অনেকেই।
এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে জাতীয় পুরস্কার জয়ী অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘জাতীয় পুরস্কার পেয়ে যখন নিজের রাজ্যে কেউ ফেরে সেটা গর্বের। এতদিন পর্যন্ত যাঁরা জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন, তাঁদের আলাদা করে সম্মান জানানো, একত্রিত করা একটা বড় উদ্যোগ। এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়ে ভালো লাগলো। আমি তো নিজেই ভুলে গিয়েছিলাম যে আমিও জাতীয় পুরস্কার পেয়েছি (হাসি)। এতবছর পর মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। সত্যিই অনেক ধন্যবাদ। এতবছর আগের ঘটনা মনে রেখেছেন, সেটা ভেবেই বেশ আনন্দ লাগছে।’

বাংলার জাতীয় গর্ব
এই বিষয়ে পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা এমন একটা উদ্যোগ, যাঁর মাধ্যমে প্রতিভার পরিচয় মিলবে। ভারতীয় হিসাবে জাতীয় পুরস্কার পেয়ে গর্বিত। আর সেই জয়ের জন্য নিজের রাজ্যে সম্মান পাওয়াটা আরও গর্বের। এটা একটা আলাদা আনন্দ, নস্টালজিয়া। এটা এই রাজ্যের প্রতিভাদের অনুপ্রাণিত করবে।’
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা সঙ্গীতা সিনহা বলেন, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’- কবিগুরুর লেখা এই গান আসলে প্রত্যেকটি বাঙালির নিজের মনের কথা। বাংলা আসলে আমাদের বড় অভিমানের জায়গা। কত প্রবাসী বাঙালি যাঁরা বাইরে থাকেন, কিন্তু নিজেদের মধ্যে এই বাঙালি সত্ত্বাকে কোথাও ঠিক বাঁচিয়ে রেখেছেন। এই বাংলার মাটির এমনই মায়া। আর আমাদের এই প্রিয় বাংলাকে যাঁরা শুধু ভারতবর্ষে নয়, সারা বিশ্বের কাছে এক অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন, তাঁদের আমরা কুর্নিশ জানাই। সেইসব মানুষ যাঁরা নিজেদের প্রতিভা এবং নিরলস পরিশ্রমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাকে সারা পৃথিবীর আকাশে উজ্জ্বল করে তুলেছেন, তাঁরা প্রত্যেকটি বাঙালির গর্ব। তাঁরা আমাদের জাতীয় গর্ব। বাঙালি হিসাবে আমরা যেন তাঁদের এই অবদানের প্রাপ্য সম্মান দিতে পারি। প্রত্যেকটি বাঙালির মনে তাঁদের নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকুক এটাই আমাদের উদ্দেশ্য।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় একটা তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন। সেখান থেকে জানা যায়, সিনেমাক্ষেত্রে পরিচালনার জন্য বাঙালিরাই সবথেকে বেশি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর তুলে ধরা তথ্য বলছে, ১৯৬৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ২১টি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন বাঙালি পরিচালকরা।