৯০-এর দশকে সুরের বাদশা ছিলেন গায়ক কুমার শানু। তাঁর কণ্ঠের জাদুতে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছিলেন তিনি। ইটি টাইমসের সঙ্গে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ধরা দেন তিনি। সেখানেই যতীন-ললিতের সঙ্গে তাঁর কাজ এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। সেখানে ইন্ডাস্ট্রির বিষয় বেশ কিছু বিস্ফারক মন্তব্য করেন গায়ক।
গত ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন কুমার শানু। এত লম্বা একটি জার্নির অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘ একটা সময় ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন তিনি। আগামী আরো কয়েক দশক ইন্ডাস্ট্রিতে কাটাতে চান। তিনি তাঁর মূল্যবোধ এবং নৈতিকতাকে বজায় রেখে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আমি অন্যের কাজের কথা ভেবে নিজেকে বিরক্ত করি না। আমি শুধু আমার কাজ নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। আমি বিশ্বাস করি যেভাবে শুরু করেছিলাম এবং যেভাবে আমি রয়েছি সেগুলো সব সময় মনে রেখে চলতে চাই’।
গায়ক কুমার শানুর কথায়, তাঁর পথে যেসব সুযোগ এসেছিল, তিনি সেগুলোকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন। তিনি যেই গান গেয়েছেন সেগুলো সঠিকভাবে গাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘তবে ইন্ডাস্ট্রিতে আজকের যেসব জেনারেশন আছে তারা নিরাপদ নয় বলে আমার মনে হয়। ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশের আগে বাইরে তোমাকে অনেক কিছু শিখতে হবে। আমার মনে হয় সেটা সঠিক নয়। এমনকি ইন্ডাস্ট্রিতে এখন অনেক গায়ক এবং কম্পোজার আছে যাঁদের মধ্যে কোনো সৃজনশীলতা নেই। অনেকেই আন্তর্জাতিক গানের থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সেগুলো হিন্দি ভাষায় কপি-পেস্ট করে দেয়। এইভাবে আমার মনে হয়ে ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে এসবের বদল আনা উচিত। এখন শিল্পে একটি পরিচয় তৈরি করা যে কোনও গায়ক বা সুরকারের পক্ষে খুব কঠিন। আমি বিশ্বাস করি যেখানে সৃজনশীলতা নেই সেখানে আপনি কোনও পরিচয় তৈরি করতে পারবেন না’।
নিজের গাওয়া গান সম্পর্কে বলতে গিয়ে শানু জানিয়েছেন, তিনি যেসব গান করেছেন সেগুলো সব মন থেকে গেয়েছেন এবং সবগুলোই ন্যায়সঙ্গত। একটা গানের পিছনে অনেক পরিশ্রম করেছেন তিনি। শুধু ভক্তরা নয় অনেকই এখনো তাঁর গান শোনেন বলে তিনি জানান। তবে ‘যব কোই বিগাড় যায়ে’ গানটা গায়কের হৃদয়ের খুব কাছের বলে জানিয়েছেন। এই গানটা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘সহজ গান এবং তৎকালীন এক শক্তিশালী বার্তা দেয়। এমন একটা গান যেটা সকলের মনে দাগ কাটে এখনও’।
ইন্ডাস্ট্রিতে স্বাধীন সংগীত ফিরে আসা নিয়ে গায়কের মতে, ‘আমি মনে করি স্বাধীন সংগীত ফিরে এসেছে তবে বিভিন্ন স্তরে শিল্পে প্রচুর সমস্যা রয়েছে। রেকর্ড স্তরে, উৎপাদন স্তরে বা পরিচালনার স্তরেও হতে পারে। তাঁরা প্রায় পাঁচ থেকে ছয় জন গায়ককে দিয়ে একটি গান করায় এবং সেগুলির মধ্যে শুধুমাত্র একজন গায়কের কণ্ঠ ব্যবহার করেন। এখন লোকেরা মনে করে নিজের স্বাধীন গান নিয়ে আসা ভাল। নিজের গানে অন্তত নিজের সৃজনশীলতা প্রদর্শন করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। আমি মনে করি এটা একটা ভাল প্রবণতা’।