প্রতি মুহূর্তে দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। শুক্রবারই বলিউডে প্রথম থাবা বসায় মহামারী করোনা। লন্ডন ফেরত গায়িকা কনিকা কাপুরের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসে। পরের ঘটনাক্রমে আরও চমকে দেওয়ার মতো। রবিবার একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল। লখনউতে কনিকা যে পাঁচতারা হোটেলে ছিলেন সেইসময় ওই হোটেলেই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট দল।
কনিকা করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে আসার পরেই উত্তর প্রদেশের স্বাস্থ্য দফতর এক হাজার সদস্যের ১০০টি দল গঠন করে ভারতে ফেরার পর কোন কোন ব্যক্তি কনিকার সংস্পর্শে এসেছেন তার তালিকা তৈরি ও তাদের নিরীক্ষণের জন্য। শনিবার কনিকার বাড়ির আশপাশের প্রায় ২২ হাজার মানুষকে স্ক্যান করা হয়েছে। পাশাপাশি অপর একটি দল খতিয়ে দেখছে সেই পাঁচতারা হোটেলের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ। ১৪ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত লখনউয়ের তাজ হোটেলে ছিলেন কনিকা।
সূত্রের খবর, সেই হোটেলের লবিতে একাধিকবার খাবার খেয়েছেন কনিকা পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে অনেকেই দেখা সাক্ষাত্ করেছেন। কনিকা যখন ওই হোটেলে ছিল সেইসময় দক্ষিণ আফ্রিকার দলও সেইখানেই ছিল। ভারতের বিরুদ্ধে লখনউতেই দ্বিতীয় একদিবসীয় ম্যাচ খেলার কথা ছিল প্রোটিয়াদের,যদিও সেটা বাতিল হয়ে যায়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ‘একটি নিউজ চ্যানেলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওই হোটেলে ছিলেন কনিকা। তাই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা খুব জরুরি, যাতে কনিকার সংস্পর্শে কারা এসেছেন তা স্পষ্ট হয়’।
লখনউ থেকে ১৬ মার্চ কলকাতায় চলে আসেন প্রোটিয়ারা। সিএবি'র তত্ত্বাবধানে সেদিন রাজারহাটের একটি হোটেলে বন্দি থাকার পর মঙ্গলবার সকালে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে দুবাই হয়ে দেশে ফেরে দক্ষিন আফ্রিকার ক্রিকেট দল।
৯ মার্চ লন্ডন থেকে মুম্বইয়ে ফেরেন কনিকা। এরপর ১১ তারিখ লখনউ পৌঁছান শিল্পী। ‘করোনা জর্জরিত ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য থেকে আসার পর কনিকাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে শুধু নিজেকেই নয় তাঁর সংস্পর্শে আসা সব মানুষের জীবনে বিপদ ডেকে এনেছেন কনিকা’, মন্তব্য লখনউয়ের চিফ মেডিক্যাল অফিসার নরেন্দ্র আগারওয়ালের। ইতিমধ্যেই গায়িকার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮,২৬৯ এবং ২৭০ ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
তাজ হোটেলে একটি জন্মদিনের পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন কনিকা। সেই হাইপ্রোফাইল পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন সেখানে হাজির ছিলেন রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে এবং বিজেপির সাংসদ দুষ্মন্ত সিং, আপতত স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন কনিকার সংস্পর্শে আসা এই দুই নেতা। দুষ্মন্ত সিংয়ের সংস্পর্শে আসার কারণে নিজেদের গৃহবন্দি করে রেখেছেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, অপনা দল সাংসদ অনুপ্রিয়া প্যাটেলরা।