‘আমরা অভিনয় করি বলে এতো সস্তা, ঘর-ভাঙানি?', সোমবার বেলা গড়াতেই নেটমাধ্যমে এই প্রশ্ন রাখলেন অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টোরাজ। গত কয়েকদিন ধরে সংবাদ মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন ছোটপর্দার এই খলনায়িকা। বাস্তব জীবনেও তাঁকে ‘ভ্যাম্প’ হিসাবেই তুলে ধরা হয়েছে। তাঁর জন্যই ভাঙনের মুখে কাঞ্চন মল্লিকের ৯ বছরের দাম্পত্য সম্পর্ক। শ্রীময়ীর বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন কাঞ্চন মল্লিকের স্ত্রী, পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার রাতে নিউ আলিপুর থানায় কাঞ্চন ও শ্রীময়ীর নামে এফআইআরও দায়ের করেছেন পিঙ্কি।
গোট ঘটনায় তাজ্জব শ্রীময়ী। এদিন ইনস্টাগ্রামে দীর্ঘ ভিডিয়ো বার্তা পোস্ট করে কৃষ্ণকলি ধারাবাহিকের খলনায়িকা রাধারাণি জানিয়েছেন কাঞ্চনের সঙ্গে তাঁকে ছড়িয়ে যে খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে তার জেরে গত কয়েকদিনে পালটে গিয়েছে তাঁর জগত। তিনি বলেন, ‘মানসিক চাপ তো বাড়ল, আমার কর্মক্ষেত্রেও অনেক ক্ষতি হবে। আমি যে পরিবারে বড় হয়েছি, সেখানে হাই-সোসাইটি, মিডিয়া, লাইমলাইট কিছু দেখেনি। আমার পরিবারের কেউ অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত নয়, কাজ ছাড়া এমন একটা কারণে আমি লাইমলাইটে আসব কোনওদিন ভাবিনি’।
চাপা ক্ষোভ নিয়ে অভিনেত্রী কাঞ্চনের স্ত্রীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেন, ‘সত্যতা যাচাই করা হোক, সত্যিটা সামনে আসবে। আমি কারুর সংসার ভেঙে, কারুর সঙ্গে পরকিয়া বা নোংরা সম্পর্কে জড়াতে চাই না।আমার এরকম ফাসট্রেশন বা আমার এরকম দিন আসেনি যে আমি একটা বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ব। সেটা বলতে পারেন… আমার সময় নেই। এখন আমার কাজের সময়, আমায় এখন কাজ করতে হবে। মানুষ আমাকে ভালোবাসা দিয়েছেন। সেটা মাথায় রাখতে হবে। আমাকে নিয়ে এমন কুত্সা করা…. যিনি করলেন, কেন করলেন আমি জানি না, জানতেও চাই না!’
ভাইরাল ভিডিয়ো প্রসঙ্গে শ্রীময়ীর সাফাই, 'যে ভিডিয়োটা নিয়ে কথা হচ্ছে, যদি আপনারা দেখে থাকেন, ওঁনার এফআইআর দায়ের করেছেন।খুব ভালো করেছেন, পুলিশ তার তদন্ত করবেন। তাহলে বলি- যদি আমি অন্যায় করতাম, তাহলে অভিনেত্রী ছেড়ে দিন, একজন মেয়ে হিসাবে ওঁনার দ্বারস্থ হতাম না। আমরা খুব খারাপ লাগছিল, কেন আমাকে শিখন্ডি খাড়া করে তাদের দীর্ঘ বৈবাহিক জীবনের চিড়?
আমরা সোশ্যাল মিডিয়া দেখলে দেখে থাকবেন, কাঞ্চনদার সঙ্গে আমার অনেক ছবি পোস্ট রয়েছে। আমি ভাবতেও লজ্জাবোধ করছি… আমার পরিবারের যদি কেউ হতো, তাঁকে নিয়েও যদি কুত্সা করা হত তাহলেও আমার লজ্জায় মাথা কাটা যেত, যেটা আমার এখন হচ্ছে। আমরা অভিনয় করি বলে এতো সস্তা, ঘর-ভাঙানি- এটা আমার রক্তে নেই। আমি বিতর্ককে উপেক্ষা করতে পারি না, তবে নিজের মন্তব্যটা দিতে পারি'।
নিজেকে নির্দোষ বলে দাবী করে, শ্রীময়ী জানান তিনিও আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন। সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমি চাইনি এতো নোংরামো, অসভ্যতামো… এতো কাদা ছোঁড়াছুড়ি, আমার কপাল খারাপ…উনি হয়ত এটাই চেয়েছিলেন। তাই রং চড়িয়ে উনি এমনটা বলেছেন। যা বলা হয়েছে আমাকে নিয়ে তা মিথ্যে কথা … আমি কাউকে ভালোবাসলে তা অকপটে স্বীকার করে নেব। কারুর সংসার ভেঙে আমায় কাউকে ভালোবাসতে হবে বলে মনে হয় না। তাঁর (কাঞ্চন মল্লিক) সঙ্গে স্নেহের সম্পর্ক থাকতে পারে… তিনি আমার মেন্টর হতে পারে, ওঁনার সঙ্গে আমি অনেক কাজ করেছি'।
পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে, মনোমানিল্য দূর করতেই শনিবার পিঙ্কির বাড়িতে পৌঁছেছিলেন শ্রীময়ী, জানান তিনি। বলেন আগেই মেসেজ করে, ভয়েস নোট পাঠিয়ে সেখানে যাওয়ার কথা পিঙ্কিকে জানিয়েছিলেন তিনি। কেন কাঞ্চনকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন? প্রশ্নের জবাবে শ্রীময়ীর উত্তর, ‘কাঞ্চনদার মাধ্যমে আমি পিঙ্কিদিকে চিনেছিলাম, তাই ওঁনার মারফতে আমি কথা বলতে চেয়েছিলাম। আমি পিঙ্কিদিকে ফোন করে ওঁনার কাছে গিয়েছিলাম, এখন পুরোটাই মিথ্যা রটনা হচ্ছে। আমি দু-মিনিট তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই, এটা জানিয়ে ওঁনার কাছে বিষয়টা পরিষ্কার করতে গিয়েছিলাম মাত্র’।