১৪ জুনের ওই অভিশপ্ত দুপুরে ঠিক কী হয়েছিল বান্দ্রার কার্টার রোডের মাউন্ড ব্লাঙ্ক অ্যাপার্টমেন্টে? ? তা নিয়ে মুম্বই পুলিশকে বিস্তারিত বয়ান দিয়েছেন সুশান্তের রাঁধুনি নীরজ। সেই বয়ান নাকি হাতে এসেছে ইন্ডিয়া টুডের। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নীরজ জানিয়েছেন দুপুর দেড়টা নাগাদ দুজন তালা চাবি নির্মাতা সুশান্তের ফ্ল্যাটে আসেন । অভিনেতার শোয়ার ঘরের দরজা ছিল ভিতর থেকে বন্ধ । ইতিমধ্যে অনেকবার ডাকাডাকি করেও ঘরের ভিতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় চাবিওয়ালেক ফোন করে ডেকে ছিলেন সিদ্ধার্থ পিঠানি। কম্পিউটারাইসড লকের ডুপ্লুিকেট চাবি তৈরিতে এক ঘন্টা সময় লাগবে জেনে চাবিওয়ালাকে বাইরে থেকে লক ভাঙতে বলা হয় । তাঁরা তখন সেইমতো কাজ করেন ও দু হাজার টাকা দিয়ে সুশান্তের কর্মচারী দীপেশ তাঁদের বিদায় জানান ।
দীপেশ ফিরে এলে সিদ্ধার্থের সাথে তিনি ঘরে প্রবেশ করেন । ঘরের ভিতর তখন পরিপূর্ণ অন্ধকার থাকায় দীপেশ ঘরের আলো জ্বালান । সিদ্ধার্থ সামনেই ছিলেন কিন্তু পরমুহূর্তেই হন্তদন্ত হয়ে ঘর থেকে তিনি বেরিয়ে আসেন । তাঁর পিছনে থাকা দীপেশ এবং নীরজও একসাথেই ঘরে প্রবেশ করেছিলেন । ঘরের এয়ার কন্ডিশনিং চালু ছিল।
নীরজ জানান , ‘ আমি দেখলাম গলায় সবুজ রঙের একটা কুর্তা পেঁচানো অবস্থায় সুশান্ত স্যারের দেহটা ঝুলছে সিলিং থেকে । তাঁর মুখটা ফেরানো ছিল জানালার দিকে । এই দৃশ্য দিকে আমি আতঙ্কে ঘর থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসি ।এরপরে সিদ্ধার্থ স্যারের দিদি মিতুকে খবর দিয়ে ঘটনার কথা জানান । তারপরে উনি আমায় বলেন অবিলম্বে একটা ছুরি জোগাড় করতে । আমি ছুরি আনার পরে আমরা দুজনে কুর্তা কেটে আস্তে আস্তে স্যারের দেহটা নিচে বিছানায় নামাই । ওনার পা বিছানার বাইরে ঝুলছিলো এবং শরীরের উর্ধাংশ ছিল খাটের ওপর । ঠিক এই সময় মিতু দিদি ঘরে প্রবেশ করেন এবং ভাইয়ের দেহ দেখে চিৎকার করে বলে ওঠেন 'গুলশন, তুই এটা কি করলি ?’ এরপর উনি আমাদের বলেন স্যারকে ধরে বিছানায় শুইয়ে দিতে । গলায় পেঁচানো কুর্তাটিকে একপাশে ফেলে রেখে দেওয়া হয় '।
'এই ঘটনার পরে সিদ্ধার্থ ,সুশান্তের বুকে চাপ দিয়ে তাঁর হৃদস্পন্দন চালু করার চেষ্টা চালান । কিন্তু ততক্ষনে সব শেষ হয়ে যাওয়ায় হাল ছেড়ে দিয়ে পুলিশে খবর দিতে বলেন । যে কুর্তা গলায় পেঁচিয়ে সুশান্ত আত্মহত্যা করেছেন করেছেন বলে ধারণা , সেরকম একই রঙের তিনটি কুর্তা সুশান্তের ছিল বলে জানিয়েছেন নীরজ । যেগুলি তিনি পূজা-অর্চনা করার সময় সুশান্ত পরতেন ', এমনটাই জানিয়েছেন নীরজ ।
আপতত সিবিআই এই মামলার তদন্ত করছে। শুক্রবার থেকে লাগাতার তিনদিন নীরজকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শনিবারের পর আজ রবিবারও জেরা করা হচ্ছে সিদ্ধার্থ পিঠানিকে। এদিন ডিআরডিও গেস্ট হাউসে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে সুশান্তের হাউজ হেল্প দীপেশ সাওয়ান্তেরও। সূত্রের খবর সিদ্ধার্থ পিঠানি ও নীরজের বয়ানের বেশ কিছু অসংগতি খুঁজে পেয়েছেন সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দলের আধিকারিকরা। আজ তিনজনকে মুখোমুখি বসিয়েও জেরা করা হতে পারে বলে খবর।