চলতি শতাব্দীতে উল্লেখ করার মতো বাংলা ছবির তালিকা হয়তো একটু বেশি লম্বা। গত দু দশকে এ রাজ্যের চলচ্চিত্র শিল্পে এক বিরাট পরিবর্তন এসেছে। আশি ও নব্বইয়ের দশকে বাংলা ছবি ইন্ডাস্ট্রি মূলত বাণিজ্যিক ছবির সাফল্যের খাতিরেই অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিল। আর এই পরিবর্তনের অন্যতম কাণ্ডারি অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। উৎসব, দোসর, চোখের বালি, মনের মানুষ, জাতিস্মর,অটোগ্রাফ,ময়ূরাক্ষী- এই সব ছবির সুবাদে গত দুই দশকে বাংলা ছবির মানচিত্রটা অনেকটাই পাল্টে দিয়েছেন বুম্বাদা।
ফিভার নেটওয়ার্ক ও হিন্দুস্তান টাইমসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত 100 Hours 100 Stars অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির হাল হাকিকত নিয়ে আরজে জিনিয়ার সঙ্গে জমজমাট আড্ডা দিলেন এই তারকা।
বানিজ্যিক ছবি ও তথাকথিত আর্ট ফিল্ম দুই জঁর ছবিতেই সফল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘আজকের জেনারেশনকে নিয়ে আমি গর্বিত। আজ যে ধরণের কাজ হচ্ছে সেটাকে মেনস্ট্রিম বা আর্ট কোনও ঘরানার মধ্যে বেঁধে রাখা যায় না। আমাদের সময়ে, বানিজ্যিক ছবি এবং আর্ট ছবির মধ্যে একটা নির্দিষ্ট ফারাক ছিল। সৌভাগ্যক্রমে আমার বন্ধু ঋতুপর্ণ ঘোষ সেই বিভেদ রেখাটা মুছে দিয়েছিল। আমি সত্যি ভাগ্যবান ওঁর সঙ্গে ৯টা ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি যে বছর চোখের বালি করেছি ঋতুর সঙ্গে, সেই বছরই রাম-লক্ষ্ণন করেছি-একই কাস্ট, আমি আর টোটা। সেইসময় থেকে আমি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করা শুরু করি, ভেবেই রেখেছিলাম আমি বাণিজ্যিক ছবিও করব,অন্য ধারার ছবিও করব। আমি বুদ্ধদা (বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত), ঋতুপর্ণ, গৌতম ঘোষ, বাপাদ্দিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি করেছি। আমি সবসময় নিজেকে ভাঙতে চেয়েছি। কিন্তু আর কর্মাশিয়াল ছবি ছবি আর আর্ট ফিল্মের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। সেই চ্যালেঞ্জটা আজকের জেনারেশন লুফে নিয়েছে। আমি সত্যি গর্বিত এটা নিয়ে’।
প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়ের কেরিয়ারে চলচ্চিত্র উত্সব কতটা গুরুত্বপূর্ন? অভিনেতার কথায়, 'আমি এখানে খুব জনপ্রিয়, আমি সত্যি সৌভাগ্যবান এত বছর ধরে মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি কিন্তু একদিন হঠাত্ই মনে হয়েছিল, কান, টরেন্টোতে আমাকে কেউ চেনে না। তারপর আমি সেটা নিয়ে কাজ শুরু করি। আমি দোসর করি, সেটা কানে গিয়েছিল। তারপর গৌতমদার স্বপ্নের দিনে অভিনয় করি সেটা টরেন্টোতে বাছাই করা ছবি ছিল। আমার এখন মনে আছে, একবার ঋতু আমাকে বলেছিল-ওকে একজন কোনও এক ফেস্টিভ্যালে আমার কথা বলেছিল, আমি সেখানে হাজির ছিলাম না। এটা ভেবে আমি খুশি হয়েছিলাম, এখন আমাকে ওখানকার মানুষ ওদের একজন বলে ধরে নিয়েছে'।
প্রায় চার দশক দীর্ঘ ফিল্মি কেরিয়ারের ৩৪০টির বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়। অনেক কঠিন চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রসেনজিত্।তবে যে চারটি চরিত্র তাঁকে রাতের পর রাত ঘুমোতে দেয়নি তা হল- মনের মানুষের লালন,গুমনামীর নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, এছাড়াও দোসরের কৌশিক চট্টোপাধ্যায় এবং জাতিস্মরের কুশল হাজরা।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দুঃস্থের পাশে দাঁড়াতেই #100Hours100Stars-র উদ্যোগ নিয়েছে ফিভার নেটওয়ার্ট। দেশের সবচেয়ে বড় ডিজিট্যাল এই ফেস্টের মাধ্যমে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কুর্নিশ জানাচ্ছে ফিভার নেটওয়ার্ক ও হিন্দুস্তান টাইমস।এই ক্যাম্পেনের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ দান করা হবে পিএম কেয়ার্স ফান্ডে।