কোন প্রোটিনের উৎসটি খোলসে আবদ্ধ থাকে? ডিম। অনেক সময়ই পুষ্টিবিদরা এই দারুন প্রোটিন সোর্সটিকে উপেক্ষা করে যান। স্ট্যান্ডার্ড আমেরিকান ডায়েট এমন অনেক খাবার সরবরাহ করে যাতে অনেক বেশি পরিমাণ কোলেস্টরল আছে এবং পুষ্টি গুণ? ভীষণই কম! ফলে এমনটা যদি হলে ডায়াবিটিসের রোগী যাঁরা তাঁরা চিন্তায় পড়ে যান। ডায়াবিটিসের রোগীদের যথাযথ খাবার দরকার হয়। কিন্তু সেই খাবারে কি তাঁরা ডিম রাখতে পারেন? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
গোটা দেহটাই একটা সিস্টেমের মতো কাজ করে, একটাকে যদি আমরা উপেক্ষা করি তার কুপ্রভাব আরেকটার উপর পড়বেই। তাই ডায়াবিটিস এবং কোলেস্টরল দুটোকে একসঙ্গে নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন, একটা কমাতে গিয়ে আরেকটা বাড়ালে চলবে না। ডায়াবিটিস হলে অনেক সময় রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে যায়। আমাদের দেহের অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নামক একটি হরমোন বের হয় যা আমাদের শরীরের সুগার লেভেল ঠিক রাখে কিন্তু যাঁদের ডায়াবিটিস থাকে তাঁদের শরীরে অগ্ন্যাশয় থেকে ঠিক মতো ইনসুলিন বের হয় না। এর ফলে সুগার লেভেল বাড়তে থাকে। আর হাই-সুগার থাকা মানেই কোলেস্টরলও গুটি গুটি পায়ে চলে আসবে। তাই আমরা কী খাচ্ছি আর না খাচ্ছি, আমাদের স্বাস্থ্য সবটাই একের অন্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই যাঁরা ডায়াবিটিসের রোগী তাঁদের খুব বুঝে শুনে খাবার খেতে হয়। এবার দেখে নিন সেই খাদ্য তালিকায় ডায়াবিটিসের রোগীরা ডিম রাখবেন কিনা।
ডিমে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন আছে যেমন, তেমনই রয়েছে কোলেস্টরল। আমাদের লিভার এবং অন্ত্র থেকে কোলেস্টরল বের হয় যা দিয়ে লিপোপ্রোটিন তৈরি হয়। তাই আমাদের দেহেই যখন নিজে থেকে কোলেস্টরল তৈরি হয় যা দরকারি সেখানে ডিমে কোলেস্টরল থাকলে নাক সিঁটকোই কেন?
আসলে বিভিন্ন ধরনের কোলেস্টরল হয়, সব ভালো কোলেস্টরল নয়। বেশি ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন ভালো কিন্তু কম ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন শরীরের জন্য মোটেই ভালো নয়। আর হাই কোলেস্টরল থাকা মানে হার্টের অসুখ হওয়া, কারণ এই রোগ সরাসরি আমাদের শিরা ধমনিগুলোর উপর প্রভাব ফেলে। হতে পারে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের মতো রোগ।
আমাদের শরীরে যে কোলেস্টরল তৈরি হয় তার থেকে খাবারে যে কোলেস্টরল পাওয়া যায় সেটা অনেক আলাদা। তাই আমরা দিনে কটা ডিম খাচ্ছি তার প্রভাব আমাদের স্বাস্থ্য এবং কোলেস্টরলের পরিমাণের উপর পড়ে। ১৮ বছর ধরে কেউ যদি টানা অতিরিক্ত পরিমাণে ডিম খান তাহলে তাঁর ডায়াবিটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায় এমনটাই ব্রিটিশ জার্নাল অব নিউট্রিশন এর একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে। একটা ডিমে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম মতো কোলেস্টরল থাকে। একজন পূর্ণ বয়স্কের উচিত দিনে। ৩০০ মিলিগ্রাম ডিম খাওয়া।
তাই যাঁদের ডায়াবিটিস আছে তাঁদের দিনে একটাই ডিম খাওয়া উচিত। মেপে খেলে অসুবিধা নেই, কিন্তু বেশি পরিমাণ ডিম খেলে তার কুপ্রভাব শরীরে পড়বে। প্রোটিনের জন্য যেমন ডিম খাওয়া উচিত, তেমনই কোলেস্টরলের জন্য ডিম এড়িয়ে যাওয়াই ভালো, তাই দুটো মিলিয়ে মেপে ডিম খেলে আর চিন্তার কারণ থাকবে না।