২৫৬ ডিমের জীবাশ্ম! যে সে ডিম নয়, হাজার হাজার বছর আগেকার অতিকায় ডাইনোসরের ডিম। তারই জীবাশ্মের খোঁজ পাওয়া গেল নর্মদা নদীর উপত্যকায়। মোট ৯২ জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে ছিল এই জীবাশ্মগুলি। সম্প্রতি সেখান থেকেই টাইটানোসরের ২৫৬ ডিমের জীবাশ্ম উদ্ধার হল। বিজ্ঞানীদের কথায়, টাইটানোসর আকারে ভারত ভূখন্ডের সবচেয়ে বড় ডাইনোসর ছিল।
সম্প্রতি পিএলওএস ওয়ান জার্নালে এই নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হয়। এই জীবাশ্মগুলির সাহায্যে ভারতীয় উপমহাদেশে টাইটানোসরের সময়কাল সম্পর্কেও ধারণা করা গিয়েছে। নর্মদা উপত্যকার লামেটা ফর্মেশন বরাবরই ফসিল বা জীবাশ্মের জন্য বিখ্যাত। এখানে ডাইনোসরের ডিম ছাড়াও মাথার খুলিও পাওয়া যায়। গবেষকদের কথায়, ১৪৫ থেকে ৬৬ মিলিয়ন (১০ লাখ) বছর আগে অস্তিত্ব ছিল। অর্থাৎ ক্রেটাসেয়াস যুগের শেষের দিকে পৃথিবীতে বেশ ভালোমতোই বিচরণ করত এই অতিকায় প্রাণী।
সম্প্রতি সেই নর্মদা উপত্যকা থেকে পাওয়া ডিমের জীবাশ্মই অনেকটা সুগম করে দিল গবেষণার পথ। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টায় জানা সম্ভব হচ্ছে টাইটানোসরের জীবনযাপনের কায়দা নিয়েও। গবেষণা চলাকালীন ডিমের মোট ছয়টি ভিন্ন প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। মাথার খুলি সংগ্রহের সময়েও এত বৈচিত্র্য পাওয়া যায়নি। মনে করা হচ্ছে এই অঞ্চলে টাইটানোসরের বিভিন্ন প্রজাতির বসবাস ছিল। যা আগে খুলির জীবাশ্ম নমুনা দেখে আন্দাজ করা সম্ভব হয়নি।
টাইটানোসররা যে যে স্থানে ডিম পাড়ত অর্থাৎ তাদের বাসস্থান দেখেও তাদের থাকার কায়দা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের কথায়, এই বিশেষ প্রজাতির ডাইনোসর মাটির মধ্যে অগভীর গর্ত করে তাতে ডিম রাখত। এই কায়দা অনেকটা এখনকার কুমিরের মতো। এছাড়াও, ডিমের বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার পর, খুব বিরল হলেও ‘ডিমের মধ্যে ডিম’ পাওয়া গিয়েছে। এর সঙ্গে সাম্প্রতিককালের পাখিদের ডিম পাড়ার অনেকটা সাদৃশ্য রয়েছে।
পাশাপাশি এক জায়গায় এত পরিমাণে বাসস্থান দেখেও মনে করা হচ্ছে পাখিদের বসবাসের কায়দার সঙ্গে অনেকটা মিল ছিল প্রাগৈতিহাসিক অতিকায় প্রাণীর। তবে প্রতিটি বাসার মধ্যে দূরত্ব অনেকটাই কম। একটি প্রাপ্তবয়স্ক ডাইনোসরের পক্ষে অতটা কম জায়গায় থাকা সম্ভব নয়। এর থেকেও মিলছে নতুনরকমের তথ্য। বিজ্ঞানীদের ধারণা, নর্মদা নদীর এই বিশেষ উপত্যকা মূলত ডিম পাড়ার জন্যই ব্যবহার করত ডাইনোসররা। ডিমের পাড়ার পর মা টাইটানোসর কাছে থাকত না বলেই অনুমান গবেষকদের।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup