সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবসময়ই যে দোষ পাল্টা দোষারোপের পালা থাকবেই তা নয়! বিবাহ বন্ধন থেকে বের হতে বহু অসুখী দম্পতিই নিজের মতো করে এগিয়ে যান। সেই চলার পথে আইনি পদক্ষপেই হল ডিভোর্স। নতুন 'নো ফল্ট ডিভোর্স' আইনের ফলে কোনও পক্ষ অন্য পক্ষকে দোষারোপ না করেই বিবাহবিচ্ছেদের পথে আিনত যেতে পারে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে কার্যকরী হয়েছে নতুন আইন।
আইনের সুবিধা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইংল্যান্ডের ৫০ বছরে ডিভোর্সের আইনের ইতিহাসে এই নো ফল্ট ডিভোর্স যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ২০২০ সালের জুন মাসে এই আইন পাশ হয়। তবে তা কার্যকরী হয়েছে সদ্য। উল্লেখ্য, এই আইনের হাত ধরে দাম্পত্যের বন্ধনে থাকা দু'জন ব্যক্তিত্বকে একে অপরের বিরুদ্ধে দোষ তুলে ধরতে হবে না। বিয়ের কারণ হিসাবে স্বামী বা স্ত্রীয়ের 'দোষ'-কে তুলে ধরা এই ডিভোর্সের আইনে প্রয়োজন নেই। অভিযোগ, দোষের বাইরে বেরিয়ে এই আইন বলছে ডিভোর্সের ক্ষেত্রে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলির দিকে নজর দেওয়া। যেমন বিবাহবিচ্ছেদের পর সন্তানের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে, বা তার জন্য আর্থিক সহায়তা, শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার মতো বিষয়ে নজর দেওয়ার কথা বলছে এই আইন।
আদালতে দাঁড়িয়ে বলতে হবে না.....
আদালতে জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে বিয়ের অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলিকে এই আইনের হাত ধরে তুলে ধরতে হবে না। প্রমাণ করতে হবে না অপরপক্ষের মধ্যে কোন কোন জটিলতা রয়েছে। এই সমস্ত সুবিধা পাওয়া যাবে নো ফল্ট ডিভোর্স আইনে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে টিনি ওয়েন্স, ইংল্যান্ডের শীর্ষ আদালতে ওঠে টিনি ওয়েন্সের মামলা। তিনি ৪০ বছরের বিবাহিত জীবনের সম্পর্ক ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন তিনি বিয়েতে অখুশি। তবে আদালতে প্রমাণ করতে পারেননি যে তিনি কেন অখুশি। এরপর থেকেই নো ফল্ট ডিভোর্সের জন্য জোরদার সওয়াল শুরু হয়।
এই আইন থেকে ভয় কোথায় রয়েছে?
ইংল্যান্ডে, ওয়েলেসের আগে স্কটল্যান্ড, আমেরিকা, জার্মানিতে এই আইন কার্যকরী হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ভয় পাচ্ছেন যে যদি এই আইনকে দেখে বিয়ে থেকে বের হওয়ার সহজ রাস্তা খুঁজে পেয়ে বহু দম্পতিই হুঠহাঠ করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন? তাহলে সমাজভাবনা কোনদিকে যেতে পারে! আপাতত উদ্বেগ সেই সমস্ত দিক ঘিরে। তবে বহুদিন ধরে যাঁদের ডিভের্সের মামলা বিভিন্ন কারণে আটকে রয়েছে, তাঁরা এই পদক্ষেপ থেকে উপকার পেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।