বছর শেষ হতে চলল। এবার পারদ অনেকটাই নেমে যাওয়ার পালা। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে পারে রোগ। শীতের সময় জীবাণুর বাড়বাড়ন্তের প্রধান কারণ চারপাশের আবহাওয়া। এই সময় বাতাসে দূষণের পরিমাণ বেড়ে যায়। শহরাঞ্চলে এই সমস্যা বেশি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাতাসের দূষক পদার্থ ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গের গুরুতর ক্ষতি করে। পারদ পড়তে শুরু করলে তাই সচেতন হওয়া জরুরি।
কেন শীতের বাতাসে দূষণ বেশি?
ধরা যাক, সারাবছর গাড়ি ও কলকারখানা থেকে একই পরিমাণ দূষক পদার্থ বায়ুর সঙ্গে মিশে যায়। গরমকালের থেকে শীতকালে এই দূষক পদার্থ বেশি ক্ষতি করে। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতে বায়ুর ঘনত্ব কমে যায়। ফলে ছোট এলাকায় দূষণের পরিমাণ বেড়ে যায়। এছাড়া দূষক পদার্থ শীতে উপরের বায়ুস্তরে যেতে পারে না। ফলে সমস্যা বাড়ে।
বায়ুর বিশুদ্ধতা কী করে বোঝা যায়?
বায়ু কতটা বিশুদ্ধ তা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স দিয়ে মাপা যায়। এই ইনডেক্সের মান যত কম, বায়ু তত বিশুদ্ধ। মান যত বেশি, বায়ুতে দূষণ তত বেশি। শহর এলাকায় এই মান সাধারণত বেশি হয়। যেমন গত কিছু দিন কলকাতার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের মান অনেকটাই বেশি রয়েছে। শূন্য থেকে ৫০০ এর মধ্যে এই মান মাপা হয়। শীতে কলকাতার গড় মান ৩০০ এর কাছাকাছি থাকে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নভেম্বর মাসেও এই মান তেমনটাই রয়েছে। এর অর্থ শীত শুরু হতেই তিলোত্তমার বাতাস বেশি দূষিত হয়ে পড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে কোন কোন রোগের আশঙ্কা বেশি?
অতিরিক্ত দূষণ থেকে প্রথমেই ফুসফুসের বিভিন্ন রোগের আশঙ্কা বাড়ে। চিকিৎসকদের কথায়, শীতের সময় প্রায়ই ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে রোগীরা চেম্বারে ভিড় করেন। এছাড়া ত্বকের নানা সমস্যা এই সময় বেড়ে যায়। শিশু ও বয়স্ক মানুষদের এই সময় বেশি যত্নে রাখা উচিত। দূষণের কারণে তাদের ফুসফুস সহজেই আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া সিওপিডি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে রোগীদের বিপদ শীতে অনেকটা বেড়ে যায়।
কী করণীয়?
যথাযথ সুরক্ষা না নিয়ে এই সময় রাস্তাঘাটে বেরোনোও ঠিক নয়। বেরোনোর সময় নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করা জরুরি। এছাড়া ধোঁয়া রয়েছে এমন এলাকায় বেশিক্ষণ থাকা ঠিক নয়। ত্বকের যত্ন নিতে ফুলহাতার জামা পরা ভালো। শ্বাসকষ্টের লক্ষণ দেখা গেলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।