ভিসেরাল লেশমানিয়াসিস বা কালাজ্বর সাধারণত গ্রীষ্মপ্রধান আবহাওয়ায় বেড়ে যায়। এক বিশেষ ধরনের স্যান্ডফ্লাই থেকে এই রোগটি নেপাল, বাংলাদেশ, ব্রাজিল ও ভারতের মতো দেশে সংক্রমিত হয়। তবে এই কালাজ্বর যদি এইচআইভির সঙ্গে জুটি বেঁধে শরীরে দানা বাঁধে তাহলে তা ভয়াবহ আকার হতে পারে। এই দুটি রোগ শরীরে একসঙ্গে দানা বাঁধলে কী কী করণীয়, তা নিয়ে নয়া গাইডলাইন পেশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু।
আগে, এই দুই রোগ শরীরে দানা বাঁধলে তার চিকিৎসা ৩৮ দিনের জন্য করা হত। তবে এখন তা ১৪ দিনে নামিয়ে আনা হয়েছে হু-এর নয়া গাইডলাইনে। ড্রাগস ফর নেগলেক্টেড ডিজিস-এর তরফে ডক্টর কবিতা সিং একথা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০২১ সাল থেকে পরিসংখ্যান দেখা গেলে জানা যাবে, ভারতের ৯৫ টি কেসের ৮৪ শতাংশ মানুষ ভিসেরাল লেশমানিয়াসিস বা কালাজ্বরের সঙ্গে এইচআইভি পজিটিভ। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, এইচআইভি-ভিএল সহ-সংক্রমণের জন্য আগে প্রস্তাবিত চিকিত্সা ৩৮ দিনের মধ্যে লাইপোসোমাল অ্যামফোটেরিসিন বি (অ্যামবিসোম) এর ইন্টারমিটেন্ট ইনজেকশন দিয়ে করা হত। নতুন চিকিত্সাটি ১৪ দিনের মধ্যে অ্যামবিসোম এবং ওরাল মিল্টেফোসিনের সংমিশ্রণে করা হচ্ছে, আর তা ভাল ফল দিচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, নতুন চিকিৎসাটি ভাল। কারণ এতে, ড্রাগের পরিমাণ আগের থেকে কমিয়ে ফেলা হয়েছে। পটনার রাজেন্দ্র মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর কৃষ্ণারাজ পাণ্ডে বলছেন, 'এতে রোগীদের সেরে ওঠার সম্ভাবনাও বেড়ে যাচ্ছে। আমরা আমাদের প্রাপ্তিতে খুবই খুশি।'
এদিকে, মনে করা হচ্ছে, হু-এর গাইডলাইন প্রাসঙ্গিকভাবে কার্যকরী হবে রোগীদের ওপর। উল্লেখ্য, দেশের মধ্যে কালাজ্বরের সমস্যা সবচেয়ে বেশি বিহারে। দেশে চলতি আর্থিক বছরে কালাজ্বরের প্রকোপে থাকা ২১৫ জনের মধযে ১৬৩ জন বিহারের। দেশে এই রোগে ৫ জন মৃতের মধ্যে ৪ জনই বিহারের। উল্লেখ্য, স্যান্ডফ্লাই বাহিত কালাজ্বর শরীরে দানা বাঁধলে তার প্রথম উপসর্গই হল ওজন হ্রাস, জ্বর। যদি তার দেখভাল না করা হয়, তাহলে রোগ শরীরে ভয়াবহ আকার নিতে পারে।