রাখি আসলে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি। ভাই ও বোন পরস্পরকে রক্ষা করবে, এটাই রাখি বন্ধনের মূল সুর। তবে এই রাখি পরানোর চল কিন্তু আধুনিক কালের নয়। পৌরানিক যুগ থেকেই রাখি পরানোর চল রয়েছে। প্রাচীন ধর্মগ্রন্থে রাখি পরানোর একাধিক উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে রাখি বন্ধন কোনও নির্দিষ্ট ধর্মের উৎসব নয়। বিভিন্ন ধর্মের মধ্যেই এই রাখি পরানোর চল রয়েছে। এই দিন দাদার হাতে একটি পবিত্র সুতো বেঁধে দেয় বোনেরা। কীভাবে শুরু হল এই রাখি পরানোর চল? রাখি বন্ধনের দিনে সেদিকেই ফিরে দেখা। প্রসঙ্গত, মহাভারতে রয়েছে রাখি পরানোর কথা। এছাড়াও, বেশ কিছু পুরাণেও পাওয়া যায় রাখি পরানোর কথা।
(আরও পড়ুন: মাঝ আকাশে অসুস্থ খুদে, বাঁচাতে এগিয়ে এলেন যাত্রী চিকিৎসকদল! কী হল তার পর)
কৃষ্ণ ও দ্রৌপদীর অ্যাখ্যান: মহাভারতে একবার একটি যুদ্ধে কৃষ্ণের কবজিতে আঘাত লাগে। সেই থেকে শুরু হয় রক্তপাত। সেই সময় পাণ্ডবদের স্ত্রী দ্রৌপদী তাঁর শাড়ির আঁচল খানিকটা ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন। এতেই কৃষ্ণ অভিভূত হয়ে যান। এই ঘটনার পর তিনি দ্রৌপদীকে নিজের বোন বলে ঘোষণা করেন। তাঁকে যথাসময়ে এঁর প্রতিদান দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। বহু বছর পর পাশা খেলায় কৌরবরা দ্রৌপদীকে অপমান করে। তাঁর বস্ত্রহরণ করে। সেই সময় কৃষ্ণ দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করে সেই প্রতিদান দেন। এই ভাবেই রাখি বন্ধনের প্রচলন বলে মনে করা হয়।
(আরও পড়ুন: মাথার মধ্যে বাসা বেঁধেছে পোকা! অস্ট্রেলিয়ার ভয়ঙ্কর কাণ্ডে তাজ্জব গোটা বিশ্ব)
বলিরাজা ও লক্ষ্মীর অ্যাখ্যান: অন্য আরেকটি অ্যাখ্যান অনুযায়ী, দৈত্যরাজা বলি বিষ্ণুর ভক্ত। বিষ্ণু বৈকুণ্ঠ ছেড়ে বলির রাজ্য রক্ষা করতে চলে আসেন। বিষ্ণুর স্ত্রী লক্ষ্মী এদিকে স্বামী না থাকায় অস্থির। স্বামীকে ফিরে পেতে তিনি এক সাধারণ মেয়ের ছদ্মবেশে বলিরাজের কাছে যান। লক্ষ্মী বলিকে জানান, তাঁর স্বামী নিরুদ্দেশ। স্বামী না ফেরা পর্যন্ত বলির কাছে আশ্রয় চান। বলি রাজা ছদ্মবেশী লক্ষ্মীকে আশ্রয় দেন। এর পর শ্রাবণ পূর্ণিমায় লক্ষ্মী বলি রাজার হাতে একটি রাখি পরিয়ে দেন। বলি রাজা এর কারণ জিজ্ঞাসা করেন। তখন লক্ষ্মী আত্মপরিচয় দিয়ে সবটা খুলে বলেন। বলি রাজা মুগ্ধ হয়ে বিষ্ণুকে বৈকুণ্ঠে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। সেই থেকে শ্রাবণ পূর্ণিমা তিথিতে বোনেরা রাখি বন্ধন হিসেবে পালন করে।