প্রত্যেক ভারতীয়ের কাছে প্রজাতন্ত্র দিবস ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ দিন। ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্রের অন্যতম ভিত হল সংবিধান। প্রজাতন্ত্র দিবস হল এই সংবিধান উদ্যাপনের দিন।
১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতীয় সংবিধান কার্যকর হয়েছিল, বা আইনি ভাষায় প্রয়োগ করা হয়েছিল। তবে সংবিধান দিবস হিসেবে ২৬ জানুয়ারি নয়, বরং ২৬ নভেম্বরকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে, কারণ ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর ভারতীয় সংবিধান গৃহীত হয়।
দেখে নেওয়া যাক ভারতীয় সংবিধান সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ:
- ভারতীয় সংবিধানে ইংরেজিতে ১,৪৬,৩৮৫টি শব্দ রয়েছে!
- ভারতীয় সংবিধান ইংরেজি ও হিন্দিতে লেখা হয়েছিল।
- ভারতীয় সংবিধান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সংবিধান। এটি টাইপরাইটারে টাইপ করা নয়। বরং হাতে লিখেছিলেন প্রেম নারায়ণ রাইজাদা।
- প্রতিটি পাতা সাজানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন রাম মনোহর সিনহা এবং আমাদের বাংলার নন্দলাল বসু।
- এই বিশাল সংবিধান লিখতে দুই বছর, ১১ মাস এবং ১৮ দিন লেগেছিল।
- সব দেশেরই যে সংবিধান ছাপার অক্ষরে লেখা রয়েছে এমন নয়। ব্রিটেন, ইজরায়েল, লিবিয়া, নিউজিল্যান্ড, ওমান, সৌদি আরবের মতো দেশে সেই অর্থে কোন লিখিত সংবিধানের চল নেই!
১৯৫০ সালের এই দিনেই স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ শপথগ্রহণ করেছিলেন গভর্নমেন্ট হাউসের দরবার হলে। মনে রাখা দরকার, ভারতীয় সংবিধানের খসড়া কমিটিতে রাজেন্দ্র প্রসাদের সঙ্গে ছিলেন ড. বিআর আম্বেদকর, কেএম মুন্সী, মোহাম্মদ সাদুল্লা, এন মাধব রাও, গোপাল স্বামী আয়াঙ্গার।
ইতিহাসের পাতায় এই প্রজাতন্ত্র দিবসের সঙ্গে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। ১৯২৮ সালের ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে নেতাজি সর্বপ্রথম পূর্ণ স্বরাজের দাবি উত্থাপন করেছিলেন। ঠিক পরের বছর লাহোর অধিবেশনেই তিনি আবার পূর্ণ স্বরাজের প্রস্তাব উত্থাপন করে সমান্তরাল সরকার গঠনের কথা বলেছিলেন। দুঃখের কথা ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি যখন ভারতে ন্যায় বিচার, সাম্য ও আদর্শের ভিত্তিতে গণপ্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়, সেদিন স্বাধীন ভারতের সবাই ছিলেন, কিন্তু দেশনায়ক নেতাজি ছিলেন না।