অল্প বয়সেই মারা গিয়েছে আদরের ছেলে। তাই সোনায় মুড়িয়ে দেহ কবর দিয়েছিলেন আত্মীয়স্বজনরা। বহু বছর আগের সেই কবরস্থ ধনসম্পত্তির খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি মিশর থেকে এমনই মমির সন্ধান পাওয়া গেল। ধারণা করা হচ্ছে, মৃত্যু পরবর্তী জীবনে যাতে অসুবিধা না হয়, তাই এমন ঢালাও আয়োজন করা হয়েছিল। এমনিতে প্রিয়জন মারা গেলে তখন মমির সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসও রাখা হত। তবে এই ধনসম্পত্তি সমেতই মমি বানানো হয় মৃতদেহকে। প্রায় একশো বছর আগে একটি কবরস্থান থেকে খোঁজ মিলেছিল এই মমির। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানা যাচ্ছে, মৃত কিশোরটির উচ্চতা ছিল চার ফুট দুই ইঞ্চি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।
মমির ভিতরের আসল মৃতদেহ দেখতে সিটি স্ক্যান পদ্ধতির সাহায্য নেন বিজ্ঞানীরা। কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর সাহার সেলিম সংবাদমাধ্যমকে জানান, এই মমিটির দেহতে মোট ৪৯টি সোনার তাবিজ ছিল। মোট তিনটি স্তরে মমি করা হয় দেহকে। মৃতদেহের কঙ্কাল ও সবচেয়ে নীচের স্তরের মাঝে ছিল এই বিশেষ কায়দায় তৈরি তাবিজগুলি। এছাড়াও এর সঙ্গে রয়েছে আই অফ হোরাস, স্কারাব, দিগন্তের আখেত তাবিজ, প্লাসেন্টা, নট অফ আইসিস। তার অনেকগুলি সোনার তৈরি, আবার কিছু কিছু মূল্যবান পাথর ও পোড়ামাটি দিয়ে তৈরি। প্রাচীন মিশরীয়রা একটি মৃত্যুর পরেও একটি জীবনের ধারণায় বিশ্বাস করতেন যেখানে প্রবেশ করার জন্য একটি চূড়ান্ত বিচারের আগে বিপজ্জনক যাত্রার মধ্যে দিয়ে যেতে হত।
এছাড়াও গবেষকদের কথায়, মমির ভিতরে কিশোরের কঙ্কালটির মাথায় একটি সোনালি মাস্ক পরানো রয়েছে। শরীরের সামনের অংশ ঢাকার জন্যই এই মাস্কটি দেওয়া হয় বলে অনুমান। এছাড়াও পায়ে ছিল এক জোড়া জুতো। মিশরের প্রাচীন ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী মৃতদেহকে একপাটি সাদা রঙের জুতো পরানো হত। মৃত্যুর পর পবিত্র মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে শপথ নেওয়ার আগে এটি খুব জরুরি পদ্ধতি। এর মাধ্যমেই একজন শুদ্ধ ও পবিত্র হয়ে ওঠেন। তবে গবেষক সালিম জানান, ধর্মীয় গ্ৰন্থ দ্য বুক অফ দ্য ডেড অনুযায়ী, এটি কফিনের ভিতরে হেঁটে বেড়ানোর সুবিধার জন্যও মৃতদেহকে দেওয়া হয়। মমির বাইরের অংশে ফার্নের মালাও পাওয়া যায়। প্রাচীন মিশরে এমন ফুল মূলত পবিত্রতার প্রতীক মনে করা হত।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup