২০২৪ সালের পদ্ম সম্মান প্রাপকদের নাম ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে। এবার মোট ১৩২ জনকে পদ্ম সম্মানে ভূষিত করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে। একাধিক রাজ্য থেকে সমাজের বিভিন্ন স্তরে নানান অবদানের জন্য ভারত সরকারের দ্বারা এই সম্মাননা প্রদান। ত্রিপুরা রাজ্য থেকেও দুজনের নাম উঠে এসেছে পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য। তারা হলেন স্মৃতি রেখা চাকমা ও চিত্তরঞ্জন দেববর্মা। এই দু'জনকেই সমাজে শিক্ষার প্রসার আধ্যাত্মিকতা ও হ্যান্ডলুম শিল্পের বিকাশের জন্য এই সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে।
চিত্তরঞ্জন দেববর্মা, 'চিত্ত মহারাজ' হিসেবে গোটা রাজ্যে প্রসিদ্ধ। বর্তমানে তিনি শান্তি কালী মিশন সোসাইটির অন্তর্গত শান্তি কালী আশ্রমের প্রধান। গোটা রাজ্যের চব্বিশটি মন্দির এই সোসাইটি দ্বারা চালিত। এই আশ্রমটি তৈরি করার মূল উদ্দেশ্য ছিল আদিবাসী সম্প্রদায়ের যুবদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা।
৬২ বছর বয়সী দেববর্মা, মাধ্যমিক পরীক্ষা উত্তীর্ণ করার পর পঞ্চায়েতে সেক্রেটারি পদে চাকরি পান। চাকরি সূত্রে তাকে বহু জায়গায় যেতে হয় এবং সেই সময় দেববর্মা আচার্য শান্তি কালীর সম্পর্কে জানতে পারেন। আচার্যের আচার ও বিচারে মুগ্ধ হয়ে দেববর্মা তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। চিত্তরঞ্জন দেববর্মা তার গুরুর মৃত্যুর পর এই আশ্রমের দায়িত্ব পান এবং আশ্রমের তরফে শিক্ষাক্ষেত্রে নবজাগরণের পুরোধা ও যজমানের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও দেববর্মা একটি আয়ুর্বেদিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিষেবা চালাচ্ছেন; যেখানে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার মাধ্যমে বহু দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা করা হয়।
অপরদিকে, লৈনলুম শাল বুননকারী স্মৃতি রেখা চাকমাও এবছর পদ্ম সম্মান প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন। 'জেইয়া জাধা (Djeia Jadha)' আমি নামে একটি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের পুরোধ। এই সংগঠনে মূল উদ্দেশ্য প্রান্তিক মহিলাদের বুনন শিল্পী করে তাদের সামাজিক স্বচ্ছলতায় ফিরিয়ে আনা। ৬৩ বছর বয়সী স্মৃতি রেখা উদ্ভিদের মূল বী জ এবং নানান ভেষজ পদার্থের মাধ্যমে ভেষজ ডাঁই (Organic Dye) তৈরির পারদর্শিতার জন্যও বহুল প্রচলিত। স্মৃতি রেখা জানান, তিনি এই বুনন শিল্প তার ঠাকুরমার কাছ থেকে শিখেছেন। ছোটবেলায় তিনি দেখতেন তার ঠাকুরমা লইনলুমে বুনতেন। সেখান থেকেই দেখে দেখে তার বুননের ওপর ভালোবাসা জন্মায়।