বিশ্ব হৃদয় দিবস বা ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে হার্টের অসুখ একজন মানুষের ভালো থাকা এবং স্বাস্থ্য দুই নিয়ন্ত্রণ করে। এটা এমন একটা জটিল পরিস্থিতি তৈরি করে দেবে যা আপনার স্বাস্থ্যকে খারাপ করে দিতে পারে এবং একই সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে আপনার যদি ডায়াবিটিস থাকে তাহলে হার্টের অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। এবং একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনাও।
কিন্তু চিন্তার কিছু নেই। হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারেন কেবল আপনার জীবনযাপনের অভ্যাস এবং ধরন পাল্টে। যেহেতু ডায়াবিটিস এমন একটা রোগ যা একাধিক রোগ ডেকে আনে, সেহেতু সবার আগে এই ডায়াবিটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। বিশেষ করে যাঁদের একাধিক কোমর্বিডিটি থেকে থাকে, তাঁদের আরও সচেতন ভাবে থাকা উচিত।
ডায়াবিটিস হলে সেটা আমাদের স্বাস্থ্যের উপর নানান ভাবে কুপ্রভাব ফেলে। কোনও নির্দিষ্ট অর্গ্যানকে প্রভাবিত করার বহু আগে থেকেই এই রোগটি আমাদের দেহে বাসা বাঁধে। তারপর এটা ধীরে ধীরে আমাদের চোখ, হার্ট, ত্বক, কিডনির উপর প্রভাব ফেলে। এছাড়া এটা মাইক্রোঅ্যাঞ্জিওপ্যাথি ঘটাতে পারে, এটা এক ধরনের জটিলতা যা ডায়াবিটিসের রোগীদের হয়ে থাকে। এটা হলে কিডনি ফেইলিওর কিংবা অন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
মাইক্রোঅ্যাঞ্জিওপ্যাথি হল এমন এক ধরনের রোগ যা বড় বড় ধমনীতে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ফ্যাট এবং রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং ধমনীর গায়ে আটকে থাকে। এর ফলে স্বাভাবিক ভাবে রক্ত চলাচল করতে পারে না।
তাই হার্টের অসুখ দূরে রাখতে আপনাকে একাধিক জিনিস মনে রেখে চলতে হবে। সবার আগে চেষ্টা করুন যাতে ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করা যায়। খালি পেটে সুগার লেভেল যেন ৯৯ এর কম থাকে এবং খাবার পর ১৪০ এর কম থাকে। কী করে সুগার নিয়ন্ত্রণ করবেন দেখুন।
১. স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার খান। ভাজাভুজি, প্যাকেড ফুড একদম খাবেন না।
২. জিম বা শরীর চর্চা করুন। রোজ অন্তত ত্রিশ মিনিট করে হাঁটুন। সঙ্গে যোগব্যায়াম বা জিম করুন। এটা আপনার সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।
৩. নিয়মিত চিকিৎসক দেখান এবং তাঁর সুপরামর্শ অনুযায়ী চলুন। সঠিক সময় মেনে ওষুধ খান।
৪. ওজন বাড়তে দেবেন না। সঠিক ওজন বজায় রাখুন। ওজন বেশি থাকলে হার্টের উপর চাপ পড়বে তাই সঠিক ওজন মেপে চলুন।
৫. চোখের সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ডায়াবিটিক রোগীদের অন্ধত্ব হতে পারে। তাই চোখের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
৬. ছয় মাস অন্তর পরীক্ষা করুন এবং দেখুন প্রোটিন এবং ক্রিয়েটিনিন লেভেল মেপে দেখুন।
৭. পায়ের যত্ন নিন। কোনও সংক্রমণ, ঘা হলেই দ্রুত ব্যবস্থা নিন। ফেলে রাখবেন না।