প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, স্প্যানিশ ফ্লু মহামারী, এমনকি কোভিড - ১৯- মহামারীকেও হারিয়ে দিয়ে জীবন যুদ্ধে জয়ী মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা। ১৯০৭ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। তাঁর ১১৭ তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন এবার। বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তি হিসাবে জায়গাও করে নিয়েছেন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস (GWR) তালিকায়। কিন্তু কীভাবে, মারিয়ার দীর্ঘায়ুর গোপন রহস্যটাই বা কী?
কোথায় থাকেন মহিলা
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ইনস্টাগ্রামে মোরেরার একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছে, 'মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা, আজ তাঁর ১১৭ তম জন্মদিন উদযাপন করছেন৷ তিনি ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসাবে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন। মারিয়া ৪ মার্চ ১৯০৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু কাতালোনিয়ায় বসতি স্থাপন করতে আট বছর বয়সে তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে স্পেনে ফিরে আসেন। তিনি তখন থেকেই এই অঞ্চলে বসবাস করছেন এবং গত ২৩ বছর ধরে একই নার্সিং হোমে রয়েছেন।'
মারিয়ার জন্মদিনের পোস্টটি শেয়ার করার পর থেকে ইতিমধ্যেই প্রায় লক্ষ লক্ষ মানুষের নজর কেড়েছে। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, অভিনন্দন জানিয়েছেন। তবে, বেশিরভাগ ব্যবহারকারীর মুখে ছিল একটাই প্রশ্ন, মারিয়ার ফিটনেস রহস্য কী। একজন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'তিনি দুটি বিশ্বযুদ্ধ এবং দুটি মহামারীর মধ্য দিয়ে বেঁচে ছিলেন, আমাদের সবার চেয়ে বিশ্ব কেমন তা তাঁরই ভাল ধারণা রয়েছে।' অন্য একজন পোস্ট করেছেন, 'তিনি আমার চেয়ে ৯৯ বছরের বড়।' তৃতীয় জনের দাবি,'ঈশ্বর তাঁকে আশীর্বাদ করুন এবং তাঁকে আরও শক্তি এবং স্বাস্থ্য দিন।'
- মারিয়ার দীর্ঘায়ুর গোপন রহস্য
GWR- এর সাথে কথা বলার সময়, মারিয়া ভাগ করেছেন যে তাঁর দীর্ঘায়ুর পিছনে শুধুমাত্র যে 'ভাগ্য এবং ভাল জেনেটিক্স' রয়েছে তা কিন্তু নয়। তাঁর এত দিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে শৃঙ্খলা, তাঁর মনের প্রশান্তি, পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে ভাল সংযোগ, প্রকৃতির সঙ্গে যোগাযোগ, মানসিক স্থিতিশীলতা, উদ্বেগবিহীন জীবন, অনুশোচনাহীন জীবন, জীবনের প্রতিটি পাতাজুড়ে প্রচুর ইতিবাচকতা এবং খারাপ ব্যক্তিত্বের মানুষদের থেকে দূরে থাকা। অর্থাৎ এই ১১৭ বছর ধরে মারিয়ার সুস্থ মানসিকতাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁকে সাহায্য করে গিয়েছে। আরও একবার প্রমাণ হয়ে গিয়েছে যে মনের জোর বড় জোর। মারিয়া এও জানিয়েছেন যে তিনি বর্তমানে ভালো অবস্থায় আছেন। তাঁর শ্রবণশক্তি এবং চলাফেরার সমস্যা ছাড়া আর কোনও শারীরিক বা মানসিক সমস্যা নেই।
যদিও ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু মহামারী এবং সেই সঙ্গে ১৯৩৬-১৯৩৯ সালের স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধের সময় নিজের খুব খারাপ স্মৃতির কথা জানিয়েছেন মারিয়া। এমনকি ১৯১৮ সালের মহামারীর এক শতাব্দীরও বেশি সময় পরে, ২০২০ সালে ১১৩ বছর বয়স চলছিল মারিয়ার। সেই সময় কয়েক সপ্তাহ পরে তিনিও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, যদিও কয়েক দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ ভাবে সুস্থও হয়ে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন।
- কীভাবে মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা তাঁর ১১৭ তম জন্মদিন পালন করেছেন
মারিয়ার নার্সিং হোমের ডিরেক্টর ইভা ক্যারেরা বক্স জিডব্লিউআরকে বলেছেন, তিনি এই বিশেষ দিনটি নিজের পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে উদযাপন করতে পেরে খুব খুশি। তাঁর জন্মদিনে এত মানুষ যে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, এ বিষয়টিও মন কেড়েছে মারিয়ার। কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।