প্রিয়াঙ্কা দেব বর্মণ
চব্বিশ ঘণ্টারও বেশি অতিক্রান্ত। কিন্তু এখনও করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেলেন না ত্রিপুরার হোটেলে ‘বন্দি’ থাকা আইপ্যাকের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের তরফে কিছু জানানো হচ্ছে না। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক অবশ্য জানিয়েছেন, আইপ্যাকের সদস্যদের নমুনা পরীক্ষার কাজ চলছে।
২০২৩ সালে বিধানসভা ভোটের আগে সেখানকার মাটিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সম্ভাবনা পরখ করতে সম্পর্তি ত্রিপুরায় যান প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার ২৩ জন সদস্য। কিন্তু সোমবার আগরতলার একটি বেসরকারি হোটেলেই তাঁদের থাকার নির্দেশ দেয় পুলিশ। জানানো হয়, করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত পিকের সংস্থার সদস্যদের হোটেলেই থাকতে হবে। পুলিশের দাবি, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে জারি করা কার্ফুর মধ্যেও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল দলটি। তাই ‘রুটিন চেক-আপের’ জন্য হোটেলে যাওয়া হয়েছিল।
কিন্তু সেই ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও আইপ্যাকের সদস্যরা করোনার রিপোর্ট পাননি। আইপ্যাকের সদস্যদের অভিযোগ, এখনও তাঁদের হোটেলের বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। করোনা রিপোর্টও দেওয়া হয়নি। ওই সূত্র বলেছেন, ‘আমাদের কেন আটক করে রাখা হয়েছে, তাও সরকারিভাবে আমাদের জানানো যায়নি। সেইসঙ্গে আমরা জানিও না যে কখন আমরা রিপোর্ট পাব।’ যদিও আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
সেই ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দিল্লিতে তিনি বলেন, ‘ত্রিপুরায় বাচ্চা-বাচ্চা ছেলেদের আটকে রাখা হয়েছে।’ আগামিকাল ত্রিপুরায় যাচ্ছেন দুই মন্ত্রী - ব্রাত্য বসু ও মলয় ঘটক এবং ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরার তৃণমূল সভাপতি আশিসলাল সিং বলেন, ‘এটা তৃৃৃণমূলের সংস্কৃতি দল। সমীক্ষার ফলাফলে ভীত হয়ে দলকে কার্যত গৃহবন্দি করে রেখেছে রাজ্য সরকার।’ তৃণমূলের সুরে বিপ্লব দেবের সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ত্রিপুরা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মানিক সরকারও। পুরো বিষয়টিকে ‘অধিকার লঙ্ঘন’ হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক মতাদর্শে পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু প্রত্যেকের তথ্য সংগ্রহ করার অধিকার আছে। তাঁদের হোটেলে আটকে রাখা যায় না। রাজ্যে জঙ্গলরাজ চলছে।’