লস্কর-ই-তৈবার জঙ্গি সাজিদ মীরের কি শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে? বিষক্রিয়ার জেরে ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম মূলচক্রীকে কি ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছে? তা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল জল্পনা। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের জেলেই সাজিদকে বিষ দেওয়া হয়েছে। তারপর আকাশপথে পঞ্জাব প্রদেশের সিএমএইচ ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যালে তাকে নিয়ে গিয়েছে পাকিস্তান সেনা। সেই হাসপাতালের ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম মূলচক্রীকে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানি সেনা বা ইসলামাবাদের তরফে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।
সংশ্লিষ্ট মহলের অবশ্য বক্তব্য, পাকিস্তানের তরফে সম্ভবত সরকারিভাবে কিছু জানানো হবে না। কারণ পুরোটাই ইসলামাবাদ তথা পাকিস্তানি সেনার পরিকল্পনা হতে পারে। বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদে আর্থিক জোগানের উপরে নজরদারি চালানো প্রতিষ্ঠানে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) কালোতালিকায় যাতে অন্তর্ভুক্ত না হতে হয়, সেজন্য কয়েকজন জঙ্গির বিরুদ্ধে এরকম ‘পরিকল্পনা’ নেওয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের ধারণা।
ওই মহলের বক্তব্য, এফএটিএফের শাস্তির কোপ থেকে রেহাই পেতে পুরোটাই 'লোক দেখানো' কাজ করছে পাকিস্তান। নাহলে একবার যদি এফএটিএফের শাস্তির কোপ নেমে আসে, তাহলে ভয়াবহ অবস্থা হবে পাকিস্তান। এখনই পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। মুদ্রাস্ফীতি চরমে উঠেছে। খাবার পাচ্ছেন না মানুষ। আটার জন্যও হাহাকার চলছে। সেই পরিস্থিতিতে যদি এফএটিফের কালোতালিকায় পাকিস্তানের নাম উঠে যায়, তাহলে বৈদেশিক অনুদানও বন্ধ হয়ে যাবে। আর সেটা অনুমান করেই পাকিস্তানি সেনা এবং পাকিস্তানি গোয়েন্দা বাহিনী ছক কষে লস্কর কমান্ডার সাজিদকে বিষ দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
এমনিতে একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছরে লস্কর কমান্ডার সাজিদের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল পাকিস্তানের একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালত। সন্ত্রাসে অর্থ জোগানের দায়ে দণ্ডিত করা হয়। তারপর থেকে কোট লাখপত জেলেই ছিল সাজিদ। সেইসঙ্গে ৪.২ লাখ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়। আর তাকে যখন ধরা হয়, তখনও এফএটিএফের শাস্তির খাঁড়া ঝুলছিল পাকিস্তানের উপর। ফলে সাজিদের গ্রেফতারি এবং তাকে বিষ দেওয়ার বিষয়টির মধ্যে একটা ‘কমন ফ্যাক্টর’ আছে।
তবে শুধু সেটাই নয়, একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, অনেকে অনুমান করছেন যে সাজিদকে যাতে আমেরিকার হাতে তুলে দিতে না হয়, সেজন্য পুরোটাই পাকিস্তানের নাটক বা ‘আইওয়াশ’ হতে পারে। তার মাথার দাম ধরা হয়েছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার। মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের অনুমান, ২৬/১১ মুম্বই হামলার পর প্লাস্টিক সার্জারি করে নেয় সাজিদ। একটা সময় বিদেশ থেকে জঙ্গি নিয়োগের দায়িত্ব সাজিদের উপর ছিল বলেই মনে করা হয়।