মুক্তমনা ব্লগের সম্পাদক অভিজিৎ রায়কে হত্যার দায়ে ৫ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল বাংলাদেশের আদালত। সঙ্গে জঙ্গিদের সমর্থনে লেখেন এমন এক উগ্রপন্থীকে যাবজ্জীবন সাজার রায় শুনিয়েছেন বিচারক। ৬ বছর আগে ঢাকার একুশে বইমেলা থেকে ফেরার সময় কুপিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিৎ রায়কে। ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে লিখতেন তিনি।
মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ আদালতের বিচারক মজিবুর রহমান ৫ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনান। রায়ে তিনি বলেছেন, ‘অভিযুক্তরা সংগঠিত হয়ে স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকারকে খর্ব করতে অভিজিৎ রায়ের ওপর হামলা চালিয়েছিল। গুরুতর এই অপরাধে মৃত্যুদণ্ড ছাড়া অন্য কোনও সাজা দেওয়া সম্ভব নয়।’
এদিন মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে জঙ্গি জিয়াউল হকের। চরমপন্থায় বিশ্বাসী হওয়ায় এই ব্যক্তিকে মেজর পদ থেকে বহিষ্কার করেছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এছাড়া জঙ্গি মোজাম্মেল হোসেন, জঙ্গি আবু সিদ্দিকি সোহেল, জঙ্গি আরাফাত রহমান ও জঙ্গি আকরাম হোসেনকে ফাঁসির সাজা দিয়েছেন বিচারক। এরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন আনসারউল্লাহ বাংলা দলের সদস্য। মৃত্যুদণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্তদের মধ্যে জিয়াউল ও আকরাম এখনো পলাতক।
এছাড়া উগ্রপন্থী লেখক শফিউর রহমান ফারাবিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার আদালত। তার বিরুদ্ধে হত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ছিল। সাজা প্রাপ্তদের মধ্যে ৩ জন আগেই অন্য একটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ছিল।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ২১ বইমেলা থেকে ফেরার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। তখন অভিজিতের সঙ্গেই ছিলেন তাঁর স্ত্রী ফরিদা আহমেদ বন্যা। মার্কিন প্রবাসী এই লেখক জঙ্গিদের হুমকি সত্বেও ২১ বইমেলায় যোগ দিতে বাংলাদেশে ফিরেছিলেন। মুক্তমনা লেখকের প্রকাশ্য হত্যায় গোটা বিশ্বে বাংলাদেশের মুখ পোড়ে। এদিন সেই কলঙ্ক কিছুটা মুছল হাসিনা সরকার।