সতেরো বছরের এক কিশোরীর গর্ভপাতের আর্জি খারিজ করে দিল বম্বে হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ। ২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ওই কিশোরীর গর্ভপাতের অনুমতি দেয়নি হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে ওই কিশোরী সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তারপর থেকে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন। যে বিষয়ে তাঁর স্পষ্ট ধারণাও ছিল। তিনি যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন, সেটাও ভালোভাবে জানতেন। যদি তিনি গর্ভপাত করতে চাইতেন, তাহলে তখনই অনুমতি চাইতে পারতেন। সেই পরিস্থিতিতে গর্ভপাত করা যাবে না বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট।
সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিরীব্বেদন অনুযায়ী, গত ২৬ জুলাই বিচারপতি রবীন্দ্র ঘুগে এবং বিচারপতি ওয়াই জি খোবরাগাঢ়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, জুলাইয়েই কিশোরীর বয়স ১৮ হয়ে যাবে। যিনি ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে এক কিশোরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তারপর দু'জনে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে কিশোরী নিজের প্রেগন্যান্সি কিট এনেছিলেন। তাতে জানতে পারেন যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: Minors seeking Abortion: গর্ভপাতে ইচ্ছুক নাবালিকাদের পরিচয় প্রকাশের প্রয়োজন নেই, চিকিৎসকদের বলল SC
যদিও মায়ের মাধ্যমে দাখিল করা পিটিশনে কিশোরী দাবি করেন, পকসো আইনে যে 'শিশু'-র অর্থ ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সেই ব্যাখ্যা অনুযায়ী তিনি এখনও শিশু। তাই গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হোক। সেইসঙ্গে ওই পিটিশনে দাবি করা হয়, কিশোরী যদি সন্তানের জন্ম দেন, তাহলে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর প্রভাব পড়বে। যিনি আরও পড়াশোনা করে আগামিদিনে চিকিৎসক হতে চান।
যদিও সেই আর্জি ধোপে টেকেনি। পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাইকোর্ট বলেছে, ‘সেই পরিস্থিতিতে পুরো বিষয়টি বিবেচনা করে মনে হচ্ছে, আবেদনকারী কিশোরী (অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী) যে কিছু জানতেন না, সেটা মোটেও নয়। বরং কী হচ্ছে, সেটা বোঝার মতো পুরো ক্ষমত ছিল তাঁর।’ আর হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, তা মেডিক্যাল রিপোর্টের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ডের সেই রিপোর্টে জানানো হয় যে ভ্রূণে কোনওরকম জটিলতা ধরা পড়েনি। ভ্রূণের বৃদ্ধিও স্বাভাবিক হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যদি গর্ভপাত করা হয়, তাহলে ভূমিষ্ঠ সন্তানের মধ্যে প্রাণের অস্তিত্ব দেখা যাবে। কিন্তু একা বেঁচে থাকা সম্ভব হবে না।
উল্লেখ্য, আইন অনুযায়ী, ২০ সপ্তাহের পরে গর্ভপাতের জন্য আদালতের অনুমতি লাগবে। যদি দেখা যায় যে গর্ভস্থ সন্তানের কারণে জীবনের ঝুঁকি আছে অথবা মা/সন্তানের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ঝুঁকি আছে, তাহলে ২০ সপ্তাহের পরও গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে যেমন কিশোরীকে গর্ভপাতের অনুমতি দেয়নি হাইকোর্ট।
বম্বে হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ জানিয়েছে, যদি পরবর্তীতে নিজের সন্তানকে দত্তক দিতে চান ওই কিশোরী, তাহলে সেই অধিকার পাবেন তিনি। যতদিন না সন্তান প্রসব করছেন, ততদিন তাঁকে কোনও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে রাখা যেতে পারে। যে সংস্থা অন্তঃস্বত্ত্বা মহিলদের দেখভাল করে থাকে।