২০২১ সালের বাদল অধিবেশনের আগে প্রকাশ্যে এসেছিল পেগাসাস ইস্যুটি। এই ঘটনা সামনে আসার পর প্রায় দেড় বছর কেটে গিয়েছে। বিগত দিনে এই ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল দেশজুড়ে। এখনও থেকে থেকেই বিরোধীরা এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রকে নিশানা করে আক্রমণ শানায়। তবে এবার সেই আক্রমণের পালটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, 'বিরোধীরা আদালতে কেন যাচ্ছে না? পেগাসাস ইস্যুটি যখন উত্থাপিত হয়েছিল, আমি তখনই বলেছিলাম যে প্রমাণ সহ আদালতে যান। কিন্তু তারা তা করেনি। তারা শুধু শোরগোল করতে জানে। কোর্ট তো আর আমাদের হাতে নেই।'
এদিকে সংসদে ঝড় ওঠার পাশাপাশি পেগাসাস ইস্যুতে মামলা গড়িয়েছিল শীর্ষ আদালত পর্যন্ত। এরপরই ঘটনা খতিয়ে দেখতে সুপ্রিম কোর্ট একটি টেকনিকাল কমিটি গঠন করে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল। পেগাসাস ‘আক্রান্ত’দের ফোন নিয়ে এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা ছিল এই প্যানেলর কাজ। গতবছর সেই সেই রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়ে। সুপ্রিম কোর্টের দ্বারা গঠিত কমিটি নিজেদের রিপোর্টে জানায়, যে ২৯ টি ফোন জমা দেওয়া হয়েছিল, সেগুলির মধ্যে পাঁচটি ফোনে ম্যালওয়ার পাওয়া গিয়েছে। তবে সেই ম্যালওয়ার আদৌও পেগাসাস কিনা, সে বিষয়ে অকাট্য কোনও প্রমাণ মেলেনি। এদিকে কমিটির অভিযোগ ছিল, তদন্তে ভারত সরকার তাদের সাহায্য করেনি।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ২০১৭ সালে ভারত এবং ইজরায়েলের মধ্যে উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্রশস্ত্র এবং গোয়েন্দা সংক্রান্ত দু'বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি হয়েছিল। যে চুক্তির ‘কেন্দ্রবিন্দু’ ছিল পেগাসাস স্পাইওয়ার এবং ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের সেই রিপোর্টকে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমেছিল কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। অভিযোগ উঠেছিল যে রাহুল গান্ধী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের দেশের বিভিন্ন বিরোধী রাজনীতিকদের ফোন হ্যাক করা হয় পেগাসাস দিয়ে। একটি রিপোর্টে দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল যেখানে সম্ভাব্য পেগাসাস ‘আক্রান্তদের’ নাম ছিল। অভিযোগ উঠেছিল, ‘মিলিটারি গ্রেড’ স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা সাংবাদিক, সমাজকর্মীদের ফোন হ্যাক করেছে সরকার। ফ্রান্স-ভিত্তিক সাংবাদিকদের একটি কনসোর্টিয়াম গত বছর ৫০ হাজার নম্বরের একটি তালিকা ফাঁস করেছিল। দাবি করা হয়েছিল, এই ৫০ হাজার ব্যক্তির উপর এনএসও গ্রুপ নজরদারির চালিয়েছিল তাদের ক্লায়েন্টদের জন্য। সেই তালিকাতেই ছিল বহু ভারতীয়র নাম। যাঁদের ফোনে পেগাসাস ইনস্টল করে নজরদারি চালানো হয়েছিল বলে তালিকায় দাবি করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবেরও নাম ছিল।