উৎপাদনে গলদ স্বীকার করার পরে অ্যাসট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি কোভিড ভ্যাক্সিন নিয়ে উঠছে অসংখ্য প্রশ্ন।
গত সোমবার উৎপাদকরা জানায়, তাদের তৈরি ভ্যাকিসন কোভিড প্রতিহত করতে গড়ে ৭০% কার্যকরী। কিন্তু সেই সঙ্গে টিকা সম্পর্কে অস্পষ্ট তথ্য উসকে দিয়েছে মাত্রাহীন উদ্বেগ, যার জেরে ভ্যাক্সিনের সাফল্য নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। পরে অবশ্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, উৎপাদন প্রক্রিয়ায় তফাৎ থাকায় কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবককে আংশিক ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছিল।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, তাদের তৈরি ভ্যাক্সিনের সম্পূর্ণ ডোজের আগে অর্ধেক ডোজ দিলে ৯০% কার্যকরী হয়। সেই সঙ্গে বলালহয়, দুটি গোটা ডোজ দিলে তা ৬২% কার্যকরী হয়। কিন্তু পরের দিনই আমেরিকার ভ্যাক্সিন প্রকল্প অপারেশন ওয়ার্প স্পিড জানিয়ে দেয়, বেশি মাত্রায় কার্যকরী ডোজ নবীনদের উপরে প্রয়োগ করা হয়েছে এবং ভায়ালে ভ্যাক্সিন পোরার সময় ভুলবশত কম পরিমাণ রাখায় কিছু স্বেচ্ছাসেবীকে অর্ধেক ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। ঘটনা হল, অ্যাস্ট্রার নিজস্ব বিবৃতিতে এই তথ্যগুলি আড়াল করা হয়েছে।
উৎপাদক সংস্থার প্রাথমিক ঘোষণায় অতিমারী অতিক্রম করার আশা জেগেছিল মানুষের মনে। ভাবা হয়েছিল, ফাইজার, মডার্না ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ডের তৈরি ভ্যাক্সিন বাজজজারে আসতে বেশি দিন আর বাকি নেই। কিন্তু সাম্প্রতিক ভ্যাক্সিন ট্রায়ালের ফলাফল বিজ্ঞানী ও বিনিয়োগকারীদের আস্থায় চিড় ধরিয়েছে, যার জেরে তাঁরা আগ্রহ হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
লগ্নিকারী সংস্থা ইডেন ট্রি ইনভেন্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট-এর কর্তা কেতন প্যাটেলের মতে, ‘ভ্যাক্সিন পরীক্ষায় সংশয় ও বিভ্রান্তি দেখা দেওয়া মোটেই সদর্থক নয় কারণ তাতে বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়। আশা করি অ্যাস্ট্রার ভ্যাক্সিন উৎপাদন বিষয়ক সমস্যা খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, স্বেচ্ছাসেবীদের একাংশকে কম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে, তা নিশ্চিত। তাদের দাবি, এখন প্রতিষেধক মাপার সঠিক প্রক্রিয়া নির্ধারিত হয়েছে এবং এবার থেকে উৎপাদিত টিকার পরিমাণ সব সময় অপরিবর্তিত থাকবে।
অন্য দিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তরফে বলা হয়েছে, ভ্যাক্সিন ট্রায়ালে উচ্চতম পর্যায় মেনে চলা হয়েছে এবং ভুল শোধরাতে গোটা প্রক্রিয়ার আরও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।