আলিগড়ে বিষমদ খেয়ে ৩৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।যদিও জেলা প্রশাসনের তরফে ১১ জনের মৃত্যুর খবর স্পষ্ট করা হয়েছে।তবে এই ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বিষ মদ খেয়েই এই এত জনের মৃত্যু হয়েছে।এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ১২ জনের মধ্যে ১১ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।এদের মধ্যে গোটা ঘটনার পাণ্ডা অনিল চৌধুরীও ধরা পড়েছেন।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভানু প্রতাপ কল্যাণী জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে সোমবারের মধ্যে ৭১টি দেহ ময়নাতদন্তের জন্য এসেছে।এরমধ্যে ৩৬ জনের মৃত্যু বিষ মদ খেয়ে হয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।ভিসেরা টেস্টের রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সামনে এসে যাবে।
ইতিমধ্যে গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। সমাজবাদী পার্টির আলিগড়ের বিধায়ক আমিরুল্লা দাবি করেছেন, এই ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের প্রতিটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।তাঁর অভিযোগ, গত ৩ দিনে যে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ওই সব দেহের ময়নাতদন্তের কাজ হয়নি।সমাজবাদী পার্টির তরফে অভিযোগ, উত্তর প্রদেশে একাধিক গ্রামে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।এই ঘটনার তদন্ত শুরু করা দরকার।বহুজন সমাজ পার্টির তরফেও এই একই অভিযোগ করা হয়।কংগ্রেসের তরফে প্রদীপ মাথুর জানিয়েছেন, এই ঘটনায় আসলে অনেক বেশি মানু্য মারা গিয়েছে।স্থানীয় প্রশাসন পুরো ঘটনাটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।সরকারের মদতেই মদ মাফিয়ারা এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
এদিকে গোটা ঘটনায় জেলা প্রশাসনের অপদার্থতাকেই দায়ী করেছেন আলিগড়ের বিজেপি সাংসদ সতীশ গৌতম।তাঁর মতে, আবগারি দফতরে দুর্নীতিগ্রস্ত লোকেরা বসে আছে।এদের জন্য এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে পুরো বিষয়টি জানাবেন বলেও জানিয়েছেন ওই বিজেপি সাংসদ।এই প্রসঙ্গে জেলা শাসককেও একহাত নিয়েছেন ওই বিজেপি সাংসদ।তাঁর মতে, জেলাশাসক তাঁর দায়িত্বভার এড়িয়ে যেতে পারেন না।এই ঘটনায় কাদের কাদের মৃত্যু হয়েছে তার সঠিক নাম ও তালিকা তৈরি করা দরকার ছিল।কিন্তু তা ঠিকমতো করা হয়নি।ঘটনা দেখে যা মনে হচ্ছে, এই ঘটনায় ৩৬ জনেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে।তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন এই বিজেপি সাংসদ।ইতিমধ্যে বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি তাঁর কাছের লোকেদের এই ঘটনা থেকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন।তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন।পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করে দেখুক ও আসল অপরাধীকে ধরুক।
ইতিমধ্যে এই ঘটনা সামনে আসতেই রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।সিনিয়র পুলিশ সুপার কালানিধি নৈথানি জানিয়েছেন, তাপ্পাল পুলিশ থানার ২ ইনস্পেকটরকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।আগ্রার যুগ্ম আবগারি কমিশনার রবিশংকর পাঠককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।আলিগড়ের ডেপুটি আবগারি কমিশনার ও পি সিংকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে।শুধু তাই নয়, আলিগড়ের পুলিশ কমিশনার গৌরব দয়ালের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে।যারা এই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।