বাংলাদেশ যেন ক্রমেই গভীর থেকে গভীরতম অর্থনৈতিক সংকটে প্রবেশ করছে। জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে এই দেশ অনেকটাই। শেখ হাসিনা সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা বাংলাদেশ। তখন অনেকেই যেন বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার মিল খুঁজে পাচ্ছেন।
শ্রীলঙ্কা ইতিমধ্যে ঋণের বোঝা এবং অর্থনৈতিক চাপের কারণে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। দেশটার পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে টাকা দিয়েও জ্বালানি, ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। যেমনটা কয়েকমাস আগে শ্রীলঙ্কায় দেখা গিয়েছিল যে এক লাফে অনেকটাই জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ঘটেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ সেই একই ঘটনা ঘটিয়েছে। এখন তাই এই প্রশ্নটা স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে তবে কি ভারত মহাসাগরের বুকে থাকা ওই দ্বীপরাষ্ট্র এর মতো বাংলাদেশও গভীর আর্থিক সংকটে পড়েছে?
সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি গত বুধবার অর্থাৎ ১০ আগস্ট সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বঙ্গবন্ধুর মডেল গ্রাম প্রতিষ্ঠা প্রকল্পের আওতায় একটি ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে গিয়ে জানান কিছুদিন ধরেই কিছু মানুষ বলছেন বাংলাদেশ না শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে, এসব ভুল। এমন কিছু হবে না বলেই তিনি আশ্বস্ত করেন। দেশবাসীকে দুশ্চিন্তা করতেও বারণ করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি জানান আর মাত্র এক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশ তার আগের জায়গায় ফিরে যাবে।
তিনি স্বীকার করে নেন যে সরকার জানে এভাবে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলতে থাকলে মানুষ অসুবিধায় পড়ছে। তবে এই সংকট যেটার মধ্যে দিয়ে এখন বাংলাদেশ যাচ্ছে তার জন্য তিনি সম্পূর্ণ ভাবে দায়ী করেছেন আমেরিকা এবং রাশিয়াকে।
এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য গত শুক্রবার মাঝরাত থেকেই জ্বালানির এই নতুন দাম কার্যকর করা হয়েছে। যার ফলে পেট্রোল ডিজেলের দাম ৩৪ থেকে ৪৪ টাকা অবধি বেড়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষকে নেহাতই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। পেট্রোল, ডিজেল, অকেটন, কেরোসিন সবই সেঞ্চুরি করে ফেলেছে। সব থেকে বেশি দাম বেড়েছে অকটেনের। প্রতি লিটার অনুযায়ী অকটেনের বর্তমান দাম হচ্ছে ১৩৫ টাকা, পেট্রোল পাওয়া যাচ্ছে ১৩০ টাকা প্রতি লিটারে। আর ডিজেলের বর্তমান দাম হচ্ছে ১১৪ টাকা প্রতি লিটার। জ্বালানি তেলের উপর থেকে সরকার ভর্তুকি তুলে নেওয়ার পরেই এভাবে দাম বেড়েছে জ্বালানি তেলের। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে বিশ্ব বাজারে যা অবস্থা তাতে দাম বাড়ানো ছাড়া আর অন্য উপায় ছিল না।
বাংলাদেশ সরকারের তরফে দেশবাসীকে ধৈর্য ধরতে বলা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ সরকার যতই আশ্বাস দিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে জ্বালানি তেলের দাম এভাবে বাড়াটা একটা অশনি সংকেত। শ্রীলঙ্কাতেও সবার আগে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম, তারপর একে একে সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে। তবে কি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে? প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।