অক্সিজেনের ঘাটতি নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্র। করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসার জন্য যে হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের ঘাটতি আছে, অবিলম্বে সেখানে যে কোনও উপায়ে কেন্দ্রকে অক্সিজেন প্রদানের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘রাষ্ট্রের কাছে মানুষের জীবন গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে মনে হচ্ছে।’
বুধবার ছুটির দিনে একটি আবেদনের জরুরি ভিত্তিতে শুনানিতে কেন্দ্রকে হাইকোর্ট বলে, ‘অক্সিজেনের জোগান বৃদ্ধির জন্য আপনারা (কেন্দ্র) সবদিক খতিয়ে দেখছেন না। ভিক্ষা করুন, ধার নিন বা চুরি করুন।’ কেন এরকম জরুরি পরিস্থিতিতেও কেন কেন্দ্রের ঘুম ভাঙছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সঙ্গে হাইকোর্টের সতর্কতা, হাসপাতালে যদি অক্সিজেনের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে যাবতীয় ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।
জরুরি ভিত্তিতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে শুরু হয়েছিল শুনানি। যা রাত ১০ টা ৪৫ মিনিটের পর পর্যন্ত চলে। দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ‘বিষয়টা হল যে অক্সিজেনের ঘাটতি আছে। সেটা এমন পর্যায়ে যে আমাদের বিষয়টির উপর নজর দিতে হবে।’ হাইকোর্টের বক্তব্য, সরকার বলতে পারে না যে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারবে না এবং আমজনতা রাস্তায় মারা যাবেন। রীতিমতো কড়া ভাষায় ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ‘এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা কোনও দায়িত্ববান সার্বভৌম রাষ্ট্রের উত্তর নয়।’ সঙ্গে যোগ করা হয়, ‘আমরা প্রাণহানি মেনে নিতে পারিনি। এটাই চূড়ান্ত পর্যায়।’ হাইকোর্টের প্রশ্ন, ‘কীভাবে সরকার এত অচেতন হতে পারে?’
সেই ভর্ৎসনার মুখে পড়ে কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আশ্বাস দেন, দিল্লিতে ৪৮০ মেট্রিক টন অক্সিজেন পাঠানো হবে। তা কোনও বাধা ছাড়াই রাজধানীতে পৌঁছাবে। হাইকোর্টের তরফে আশাপ্রকাশ করা হয়েছে যে দিল্লির হাসপাতালগুলির অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ করা হবে। যাতে বৃহস্পতিবার আবারও মামলার শুনানির সময় পর্যন্ত অক্সিজেনের অভাবে কারও মৃত্যু না হয়। পাশাপাশি দ্রুত অক্সিজেনে সরবরাহের জন্য কেন্দ্রকে বিকল্প পদ্ধতি বিবেচনারও চিন্তাভাবনা করার পরামর্শ দিয়েছে হাইকোর্ট।