এই ঘটনা ২৮ বছরের জয়শ্রী রাহুল ও ২৩ বছরের রাখী দাসের। তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। সমকামী এই জুটি তাদের বিয়ের পর্ব সদ্য সম্পন্ন করেছেন উত্তর প্রদেশে। উত্তর প্রদেশের দেওরিয়ার এক মন্দিরে তাঁরা বিয়ে করেছেন।
বিয়ের হলফনামা দিয়ে, জয়শ্রী ও রাখী দাস তাঁদের বিয়ে উত্তর প্রদেশের ভাগাড়া ভবানী মন্দিরে সম্পন্ন করেছেন। এই বিয়ের আসরের আয়োজক মুন্না পাল। তিনিই সংবাদমাধ্যমকে এই বিয়ের কথা জানিয়েছেন। জানা গিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী হিন্দুরীতি মেনে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। কিছুদিন আগে দীর্গেশ্বরানাথ মন্দিরে এই দম্পতি তাঁদের বিয়ের জন্য আবেদন জানালেও, তা খারিজ হয়। সেই মন্দিরের মহান্ত জগন্নাথ মহারাজ জানিয়েছেন, এই বিয়ে নিয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষের সায় নেই। ফলে এই সমকামী জুটিকে খুঁজতে হয়েছে আলাদা রাস্তা। নোটারাইজড হলফনামা জমা করে তাঁরা বিয়ের পথে হাঁটেন। হলফনামা জমা দেওয়ার পর ভাগাড়া ভবানীমন্দিরে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পুরোহিত। তাঁর আশীর্বাদ নিয়েই সম্পন্ন হয়েছে বিয়ে।
বিয়ের পর তাঁরা জানান, কীভাবে তাঁদের প্রেম পর্বকে নানান ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। কতটা সমস্যায় পড়েছিলেন তাঁরা। আর তার মধ্যে দিয়েই একে অপরের প্রতি তাঁরা কতটা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, সেকথাও জানান রাখী ও জয়শ্রী। উল্লেখ্য, ভারতের সমলিঙ্গের সম্পর্ককে বৈধতা আগেই দিয়েছে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। তবে সমলিঙ্গের বিয়েতে এখনও মেলেনি আইনি বৈধতা। এক রায়ে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ দেশে সমলিঙ্গের মানুষদের অধিকার সুনিশ্চিত করার বিষয়ে বার্তা দেয়। তবে প্রশ্ন ওঠে, কেন সমলিঙ্গের বিয়ের স্বীকৃতি দিল না সুপ্রিম কোর্ট? তার জবাবে দানা যায়, সমলিঙ্গের জুটির মানুষকে বিয়ের মৌলিক অধিকার দেওয়া সম্ভব নয়। সমলিঙ্গের বিয়েকে বৈধ বিয়ের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিকে খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বিয়ের অধিকার নিয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা নেবে দেশের সংসদ। এই অধিকার নেই সুপ্রিম কোর্টের। সংসদ সদস্যরাই তা করতে পারবেন। ফলে দেশের আইন সভার উপরই বিষয়টি ন্যস্ত বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে বলেছে, বিয়ের ধরণগুলির পরিবর্তন হয়েছে। সতীদাহ থেকে বিধবা বিবাহ, ভিন জাতে বিয়ে সহ বিভিন্ন পরিবর্তন এসেছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। তাই এখনই তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।