জনসমক্ষে কাউকে পাগল বলা কোনও অপরাধ নয়, তা অভদ্রতা। এক মামলার প্রক্ষিতে এই পর্যবেক্ষণের কথা জানাল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত সুপ্রিম কোর্টের একটি পুরনো রায়কে তুলে ধরে জানায়, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৪ ধারা অর্থাৎ শান্তিভঙ্গের উদ্দেশ্যে একে অপমানের অধীনে অপরাধ বলা যাবে না।
আদালত বলে, এই মামলায় পাগলা বলাটা ছিল অনিচ্ছাকৃত স্বতঃস্ফূর্ত মন্তব্য। কোনও ব্যক্তির শান্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে এই মন্তব্য করা করা হয়নি। তাই এই স্বতঃস্ফূর্ত মন্তব্যকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করা যায় না।
পড়ুন। বৃহন্নলাদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য নিম্ন আদালতের, তীব্র নিন্দা করল বম্বে হাইকোর্ট
প্রসঙ্গত, এই মামলার শুরু হয় বারাণসীর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে। কিরণ সোসাইটি নামে এক সংস্থার বিরুদ্ধে তহবিল তছরুপের অভিযোগ এনেছিলেন প্রতিবন্ধীদের ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা এক আইনজীবী। ওই সংস্থার পরিচালক-সহ আরও দশজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুপক্ষকেই এক বৈঠকে ডাকেন। সেই বৈঠক চলাকালীন আইনজীবীকে কিরণ সোসাইটির পরিচালক পাগল বলে অপমান করেন বলে অভিযোগ।
পড়ুন। ৮টি কুকুর ছানা হত্যায় মাত্র ১০০০ টাকা জরিমানা, নিম্ন আদালতের রায় বহাল হাইকোর্টে
এরপর আইনজীবী তাঁর শান্তিভঙ্গের জন্য তাঁকে অপমান করা হয়েছে বলে কিরণ সোসাইটির পরিচালকের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে মামলা করেন। ২০২১ সালে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এই মামলায় কিরণ সোসাইটির পরিচালককে দোষী সাব্যস্ত করেন।
নিম্ন আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এলাহাবাদ হাইকোর্টে যান কিরণ সোসাইটির ডিরেক্টর। মামলায় তিনি বলেন, আইনজীবীর শান্তিভঙ্গের উদ্দেশ্যে তিনি ওই মন্তব্য করেননি। তাঁর মন্তব্য ছিল স্বতঃস্ফুর্ত। তাঁকে যে ইচ্ছাকৃত ভাবে অপমান করা হয়েছে, তার কোনও প্রমাণ নেই।
পড়ুন। বাংলার বর্ষার ধরণে ব্যাপক বদল, প্রভাব পড়তে পারে কৃষি ও অর্থনীতিতে: রিপোর্ট
মামলায় বিচারপতি বলেন, ‘বিভিন্ন সময় আমরা এই ধরনের মন্তব্যগুলি করে থাকি খুব আ ভাবে।এমনকি রোজকার নিয়মিত কথোপকথনে, যেখানে ইচ্ছাকৃত ভাবে শান্তিভঙ্গের কোনও উদ্দেশ্ থাকে না। যদি কোনও ব্যক্তি এই ধরনের মন্তব্য করেন, তা অভদ্র এবং অনুপযুক্ত বলা যেতে পারে। কিন্তু একে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৪ ধারা অধীনে অপরাধ বলা যায় না।’ আদালত মামলাটি খারিজ করে দেয়।