একদিকে ওমিক্রনের আতঙ্ক অন্যদিকে ঘরে ঘরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন গোটা দেশ। তাই পরিস্থিতি যে কোনও মুহূর্তে হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। এখন অবশ্য হাসপাতালে এই সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হওয়ার নজির কম। তারপরও এই নিয়ে রাজ্যগুলিকে এখন থেকেই প্রস্তুত হতে বলল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
বুধবার রাজ্য সরকারকে এই নিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ উল্লেখ করেছেন, রাজ্য সরকার যেন এখন থেকে মেডিক্যাল অক্সিজেন মজুত করতে উদ্যোগী হয়। সমস্ত হাসপাতাল, নার্সিংহোম থেকে শুরু করে বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে লিক্যুইড মেডিক্যাল অক্সিজেন রাখার ব্যবস্থা করতে বলেছেন স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ। তিনি দু’পাতার চিঠিতে রাজ্য সরকারকে ১১টি বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেছেন।
কী কী লিখেছেন তিনি? এদিন তাঁর পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে— যেসব চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগী ভর্তির ব্যবস্থা রয়েছে এবং ভর্তি করে চিকিৎসা করার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে মেডিক্যাল অক্সিজেন মজুত রাখতে হবে। আর লিক্যুইড মেডিক্যাল অক্সিজেনের ট্যাঙ্ক পূর্ণ রাখা প্রয়োজন। যাতে অক্সিজেন সরবরাহে সমস্যা না হয়।
তাঁর চিঠিতে লেখা রয়েছে, অক্সিজেন প্ল্যান্টগুলি চালু রাখার ব্যবস্থা করতে। এমনকী পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রাখতেও হবে। ফাঁকা অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখা যাবে না। বরং তা দ্রুত ভরার ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে সমস্ত জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠানো হচ্ছে, তা কাজ করছে কি না খতিয়ে দেখে নিতে হবে।
তিনি চিঠিতে আরও লিখেছেন, বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে অক্সিজেনের জোগান দেওয়ার ক্ষমতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। এছাড়া অক্সিজেন কন্ট্রোল রুম তৈরি করে অক্সিজেন সংক্রান্ত সমস্যা দ্রুত সমাধান করার ব্যবস্থা করতে হবে। আর যে সমস্ত চিকিৎসা কেন্দ্রে অক্সিজেন পরিষেবা মিলবে সেগুলির নাম ওডিএস ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নথিভুক্ত করা। অক্সিজেন সিলিন্ডারকে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা। একইসঙ্গে ভেন্টিলেটরস, বাইপ্যাপ, এসপিওটু সিস্টেমের মতো জীবনদায়ী মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি সহজে পাওয়ার ব্যবস্থা রাখা।
এই বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার পাশাপাশি তিনি চিঠিতে যুক্ত করেছেন, অক্সিজেন সরবরাহের সঙ্গে যুক্তদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার কথা। দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক ইতিমধ্যেই অক্সিজেন প্ল্যান্টের কর্মীদের জন্য ১০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ৪০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণে মাস্টার ট্রেনার এবং অক্সিজেন প্ল্যান্টের সমস্যা দূর করতে প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি করার জন্য ১৮০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। রাজ্য সরকার যেন প্রশিক্ষিত কর্মীই নিয়োগ করে। আগাম সতর্কতা নিলে বিপদ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।