ভারতের জন্য ‘গেমচেঞ্জার’ হতে চলেছে চন্দ্রযান-৩। সেই চন্দ্রাভিযান সফল হলে পুরো বিশ্বের মহাকাশ ক্ষেত্রের মানচিত্র পালটে যাবে। বিশ্বের মহাকাশ ব্যবসার যে বাজার আছে, আরও বেশি অংশ দখল করতে পারবে ভারত (আপাতত বিশ্বব্যাপী ৬০০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায় ভারতের অংশীদারিত্ব আছে মাত্র দুই শতাংশের মতো)। শুধু তাই নয়, ভারতীয় অর্থনীতিরও ভোল পালটে দিতে পারে চন্দ্রযান-৩। এমনটাই মনে করছেন ইন্ডিয়ান স্পেস অ্যান্ড রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (ইসরো) বিজ্ঞানী নাম্বি নারায়ণন। যিনি দীর্ঘ কয়েক বছর পরে ‘চরবৃত্তির’ বদনাম ঘুচেছিল। তাঁর মতে, বিশ্বের অন্যান্য দেশ যে পরিমাণ অর্থ খরচ করে চাঁদে যাওয়ার চেষ্টা করে, তার থেকে অনেক কম খরচে ভারতের চন্দ্রাভিযান যদি সাফল্যের মুখ দেখে, তাহলে পুরো বিশ্বের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে ভারত।
অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান ৩-র উৎক্ষেপণের আগে একটি সাক্ষাৎকারে সংবাদসংস্থা এএনআইকে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরোর প্রাক্তন বিজ্ঞানী বলেন, 'ভারতের জন্য নিশ্চিতভাবে গেমচেঞ্জার হতে চলেছে চন্দ্রযান-৩। আমি আশা করছি যে এই মিশন সফল হবে। (আর সেই মিশন সফল হলে) পুরো বিশ্বের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে ভারত। (চন্দ্রযান ৩-র) উৎক্ষেপণের জন্য অপেক্ষা করা হোক এবং সেরা ফলের জন্য প্রার্থনা করা হোক।'
ইসরোর প্রাক্তন বিজ্ঞানীর বক্তব্য, সফটওয়্যার এবং যান্ত্রিক কিছু বিষয়ের গোলযোগের জন্য চন্দ্রযান-২ চাঁদে অবতরণ করতে পারেনি। পরবর্তী চার বছর যাবতীয় বিষয় নিয়ে কাজ চালিয়ে গিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। আর এবার চন্দ্রযান-৩ সফল হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি (সেক্ষেত্রে আমরিকা, পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চিনের পর চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদে পা রাখবে)। আর যদি সেটাই হয়, তাহলে ভারতের বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্র আরও চাঙ্গা হবে। ভারতের অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে বলে আশপ্রকাশ করেছেন ইসরোর প্রাক্তন বিজ্ঞানী।
তাঁর মতে, যে কোনও দেশের কাছে নিজস্ব প্রযুক্তির গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। আর ইসরোর তো কম খরচে স্বপ্নের মহাকাশ মিশন পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যাপক সুনাম আছে। তিনি বলেন, 'অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে যে এরকম মিশনে আমাদের খরচ একেবারে নগণ্য হয়।' সেই পরিস্থিতিতে চন্দ্রযান-৩ যদি চাঁদের মাটিতে পা রাখতে পারে, তাহলে ভারতের মহাকাশ ক্ষেত্রের সঙ্গ যুক্ত হতে চাইবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
ইসরোর প্রাক্তন বিজ্ঞানী জানান, ভারতের চন্দ্রাভিযান সফল হলে মহাকাশ ক্ষেত্রে আরও বেশি সংখ্যক স্টার্ট-আপ ঢুকতে শুরু করবে। ভারত যেহেতু ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্টার্ট-আপকে প্রযুক্তি উন্নতির ময়দানে স্বাগত জানাচ্ছি, তাই চন্দ্রযান-৩ সফল হলে স্টার্ট-আপগুলির কাজের সুযোগ আরও বাড়বে। পিটিআইকে নারায়ণ বলেন, ‘এটা একাধিক সংস্থার জন্য একটি বড় বিষয় হবে। যারা নিজেদের কাজ শুরু করতে চাইবে। উদাহরণস্বরূপ, আমার ধারণা যে প্রচুর স্টার্ট-আপ আসবে। আমাদের যে স্টার্ট-আপগুলি আছে, সেগুলির অর্থ পাওয়ার প্রশস্ত হবে। অনেক বিদেশি স্টার্ট-আপও এগিয়ে আসতে পারে বা ভারতের বিভিন্ন স্টার্ট-আপের সঙ্গে হাত মেলাতে পারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।’