রীতিমত পরিকল্পনা করেই গালওয়ানে ভারতীয় সেনার ওপর হামলা চালায় লাল ফৌজ বলে জানিয়েছে মার্কিন কমিশন। মার্কিন কংগ্রেসে জমা দেওয়া রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। ১৫ জুন গালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২০জন ভারতীয় ও অজানা সংখ্যক চিনা সৈনিকের মৃত্যু হয়।
মার্কিন-চিন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা রিভিউ কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে পয়লা ডিসেম্বর। সেখানে বলা হয়েছে যে এই আট মাস ধরে চলা অচলাবস্থা বহু দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সীমান্ত সংকট। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে এটার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে চিনা সরকার আগে থেকে পরিকল্পনা করেছিল। তাদের দিকে যে হতাহত হতে পারে, সেই বিষয়টিও আন্দাজ ছিল লাল ফৌজের। এই প্রসঙ্গে চিনর প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই যে ভাবে যুদ্ধের প্রাসঙ্গিকতার বলেছিলেন, সেটা উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
প্রায় হাজার সৈনিক গালওয়ানে ভারতীয় বাহিনীর ওপর হামলা করে বলে কমিশন জানিয়েছে। শি জিনপিং ২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর পাঁচবার সীমান্তে বড় রকমের অশান্তি হয়েছে বলে রিপোর্টে প্রকাশ। তবে গালওয়ান পরবর্তী প্যাংগং লেকে প্রথমবার দুই রাষ্ট্রের মধ্যে গুলি বিনিময় হয় প্রায় চার দশক পরে।
যেভাবে চিনের সরকারি মুখপাত্র গ্লোবাল টাইমসে ভারতের বিরুদ্ধে সুর চড়ানো হয়েছিল সেটাও লেখা হয়েছে রিপোর্টে। ২০০০ সালে এই কমিশন তৈরি করা হয়েছিল বার্ষক রিপোর্ট তৈরি করার জন্য চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের ওপর নিরাপত্তার প্রভাব বিশ্লেষণ করার জন্য। এবারের রিপোর্টে হংকং ও তাওয়ানে যেভাবে চিন দমননীতি চালাচ্ছে, সেটা নিয়ে বিস্তারিত লেখা আছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এই আক্রমণ থেকে যদি জমি দখল করা লক্ষ্য ছিল চিনের, তাহলে তারা সফল। কিন্তু যদি এটা নিয়ে ভারতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিবিড়ি সম্পর্ক তৈরি করা থেকে নিরস্ত করার লক্ষ্য থেকে থাকে বা ভারতকে সীমান্তে পরিকাঠামো নির্মাণ করা থেকে বিরত করার জন্য হয়ে থাকে, তাহলে ব্যর্থ বেজিং। যেভাবে গালওয়ানে সংঘর্ষের পর পুরো গালওয়ান উপত্যকার ওপর নিজেদের দাবি জানায় বেজিং, সেটা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাকে অনেকটাই বদলে দেওয়ার প্রচেষ্টা বলে মনে করে কমিশন।
তবে ঠিক কি কারণে চিন হানা চালিয়েছিল, সেটা বলতে পারেনি কমিশন। তাদের মতে ভারত সীমান্তে সংবেদনশীল স্থানে রাস্তা বানিয়েছে দেখেই লাল ফৌজ নড়েচড়ে বসে যদিও তারা নিজেদের দিকে রাস্তা ও পরিকাঠামো তৈরি করে রেখেছে! ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ, হংকংয়ে মানবাধিকার বিরোধী আইন সহ বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের সুনাম নিয়ে পরোয়া করে না চিন।
.