বর্তমানে চিন একটা 'দুর্বল ভারতকে' দেখছে। একটা দেশ যা অভ্যন্তরীণ সমস্যায় খণ্ড খণ্ড হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার এক ভিডিয়ো আলোচনায় এমনটাই বললেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। 'একটা সুস্পষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে ভারত এগোলে আমাদের পক্ষে চিনকে টেক্কা দেওয়া কোনও ব্যাপারই নয়,' বললেন রাহুল।
প্রাক্তন মার্কিন কূটনীতিবিদ ও হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের অ্যাম্বাসাডর নিকোলাস বার্নস-এর সঙ্গে শুক্রবার ভিডিয়ো আলোচনায় যোগ দেন কংগ্রেস নেতা। সেখানে ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতির জোট, বিশ্ব অর্থনীতি ও বিদেশনীতি নিয়ে আলোচনা হয়। চিনের অগণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী আগ্রাসন নিয়েও আলোচনা হয় দুই পক্ষের মধ্যে।
আলোচনার মাঝেই নিজের আইফোন বের করে দেখান রাহুল। সেটি দেখিয়ে তিনি বলেন, 'বিশ্ব জুড়ে উত্পাদন বৃদ্ধির লড়াইয়ে চিন জিতে গিয়েছে। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর বিরুদ্ধে কিছুই করার চেষ্টা করছে বলে আমার মনে হয় না।'
তিনি বলেন, ভারতের কোনও সুষ্ঠ পরিকল্পনা, নীতি ও নেতৃত্বের প্রয়োজন। সেটা থাকলেই চিনকে ছাপিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ভারতের রয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের জমানায় চিন ভারতকে ভয় পায় না। একটা দুর্বল ভারতের ছবি দেখছে চিন। এমন এক ভারত যার মধ্যে কোনও ঐক্য নেই।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন সরকারের উপর ধীরে ধীরে আস্থা হারাচ্ছেন দেশবাসী। ফলে আমাদের লড়াইটা কিছুটা সহজ। তবে, কংগ্রেসের মধ্যেও কিছু বদল আনা হয়েছে। আমাদের নিজেদেরও সময়ের সঙ্গে পাল্টে ফেলতে হবে।
রাহুল বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধু কংগ্রেসই নয়, কোনও দলই নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারছে না। সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি-র উদাহরণ দেন তিনি। এর কারণ কী?
কারণ হিসাবে রাহুল বেশ কয়েকটি যুক্তি দেন। তিনি বলেন, 'নির্বাচনে লড়তে কোনও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান চাই, নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা চাই যা আমাকে রক্ষা করবে।'
এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকাও তুলে ধরেন তিনি। তাঁর কথায়, 'মুক্ত নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যম চাই নির্বাচনে লড়তে।' অসম নির্বাচনে ইভিএম বিতর্ক নিয়ে রাহুল বলেন, 'ওখানে যে ভদ্রলোক আমাদের প্রচারের দায়িত্ব সামলান, তিনি আমাকে অনেক ভিডিয়ো পাঠিয়েছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে গাড়ি করে ভোটিং মেশিন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিজেপি প্রার্থীরা। কিন্তু সেটা নিয়ে জাতীয় মিডিয়ায় একটা শব্দও নেই।'
তিনি বলেন, বিজেপির কাজকর্মের ফলে বহু মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের উপায় একটাই। সকলকে আবার একত্রিত করা। কিন্তু সেই সঙ্গে আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে কংগ্রেস আর আগের মতো মানসিকতায় নেই।