বৃহস্পতিবার উজবেকিস্তানে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাক্ষাৎ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন এসসিওর শীর্ষ সম্মেলন শুরু হচ্ছে সেদিন৷ সোমবার চিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে শি জিনপিংয়ের উজবেকিস্তান সফরের কথা থাকলেও পুটিনের সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ নেই৷ তবে এসসিওর আট সদস্যের মধ্যে রাশিয়া রয়েছে৷ এবং সম্মেলন উপলক্ষ্যে পুটিন উজবেকিস্তান যাচ্ছেন৷ চিন ও রাশিয়া ছাড়া এসসিওর বাকি সদস্যরা হচ্ছে কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, ভারত ও পাকিস্তান৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন৷
সম্মেলনে যোগ দিতে করোনার শুরুর পর প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে যাচ্ছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং৷ এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরুর কিছুদিন আগে চিনে শি জিনপিং ও পুটিনের মধ্যে বৈঠক হয়েছে৷ সেইসময় তারা দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ‘কোনও নির্দিষ্ট সীমা না থাকার' কথা উল্লেখ করেছেন৷
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়েছে৷ এই অবস্থায় চিন রাশিয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে৷ রাশিয়ার জ্বালানি কিনে রাশিয়াকে আর্থিক সমর্থনও দিয়ে যাচ্ছে চিন৷ এছাড়া রাশিয়ায় গাড়ি ও অন্যান্য পণ্য রফতানি করছে চিন৷ আবার তাইওয়ান ইস্যুকে কেন্দ্র করে পশ্চিমের সঙ্গে চিনের সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হলে রাশিয়া চিনকে সমর্থন জানায়৷
এই অবস্থায় উজবেকিস্তানে বৈঠক করে চিন ও রাশিয়ার নেতা পশ্চিমের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার সংকেত দিতে পারেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ তাইওয়ানের ইন্সটিটিউট ফর ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি রিসার্চের মধ্য এশিয়া বিশেষজ্ঞ চিয়েন-ইয়ু শিহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, পশ্চিমের সঙ্গে চিন ও রাশিয়ার উত্তেজনা দেশ দুটির মধ্যে সহযোগিতা বাড়াবে৷
কিরঘিজস্তানের থিংক ট্যাংক ওএসসিই একাডেমির সিনিয়র রিসার্চার নিভা ইয়াও বলছেন, পশ্চিমের নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক অর্ডারে পরিবর্তন আনতে চায় রাশিয়া ও চিন৷ সে কারণে দেশ দুটির মধ্যে জোট তৈরি হচ্ছে৷ তবে এক্ষেত্রে চিন একটি বিষয় অনুধাবন করতে পারছে না বলে মনে করেন ইয়াও৷ তিনি বলেন, ‘চিন যেটা বুঝছে না সেটা হচ্ছে রাশিয়ার লক্ষ্য পশ্চিমকে টেনে নামানো নয়, বরং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে ফিরিয়ে আনা৷''
উজবেকিস্তান, কাজাখস্তানের মতো দেশগুলো সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল৷ তাই রাশিয়া তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করতে চায়৷ আবার চিনও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে চায় কারণ চিনের প্রস্তাবিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান-সহ মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর গুরুত্ব রয়েছে৷ তবে মধ্য এশিয়ার দেশগুলো আরব বিশ্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে চাইছে৷ কারণ ইউক্রেন ও তাইওয়ানকে ঘিরে শুরু হওয়া উত্তেজনার জন্য তারা চিন কিংবা রাশিয়ার উপর খুব বেশি নির্ভরশীল হতে চাইছে না৷
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)