চিন এখনও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় বিভিন্ন ফরওয়ার্ড পজিশন থেকে সরেনি বলেই জানাল মার্কিন প্রশাসন। এক শীর্ষ সামরিক অফিসার এই কথা বললেন মার্কিন নীতি নির্ধারকদের। আমেরিকার ইন্দো-প্যাসিফিক কম্যান্ডের নেতা অ্যাডমিরাল ফিলিপ ডেভিডসন এই কথা জানান। একই ভাবে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষে কীভাবে নানান ভাবে ভারতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে আমেরিকা, সেই কথাও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, পূর্ব লাদাখে প্রায় দশ মাস অচলাবস্থার পর অবশেষে প্যাংগং সো থেকে সরেছে ভারত ও চিন সেনা। তবে এখনও গোগরা, হট স্প্রিংস ও দেপসাংয়ে সমস্যা রয়েছে। সেই প্রসঙ্গটিই উঠে এসেছে মার্কিন সামরিক নেতার কথায়।
মার্কিন সেনেটে শুনানির সময় অ্যাডমিরাল ডেভিডসন জানান যে লাল ফৌজ এখনও বেশ কিছু অঞ্চল থেকে সরেনি যেখানে তারা ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল। চিনের সেনার আচরণের জেরেই দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল যাতে উভয় দেশেরই প্রাণহানি হয়েছে বলে জানান সামরিক কর্তা।
তিনি বলেন সীমান্তে চিনের আচরণ থেকে এটা স্পষ্ট যে তারা নিজেদের ভূমি বৃদ্ধি করতে চায়। ওই উচ্চতা, দূরত্ব ও বন্ধুর ভূমিতে যেভাবে চিন অত সেনা জড়ো করেছিল তার থেকে এই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে যে প্রয়োজনে নিজেদের অনুকুলে ফলাফলের জন্য তারা বলপ্রয়োগ করতে পিছপা হবে না। এই সংঘর্ষের পুরো দায় চিনের ওপর চাপিয়ে তিনি বলেন যে এলএসি-র ধারে প্রাথমিক ভাবে নির্মাণ প্রকল্প শুরু করে লাল ফৌজ। তারপর ধীরে ধীরে প্রায় ৫০ হাজার সেনা সেখানে জড়ো করে চিন। পালটা সেনা নিয়ে যায় ভারত।
এই সংঘর্ষের পর ভারতের চোখ খুলে গিয়েছে বলে মনে করেন ডেভিডসন। তাঁর মতে ভারত এখন বুঝতে পেরেছে যে নিজেদের রক্ষা করার জন্য অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা ভারত এখন বুঝতে পেরেছে। এমনকী এর ফলে ভারত যে অন্য কোনও দেশের সঙ্গে জোট না বাঁধার বিদেশনীতি মেনে চলে, সেটাও পরিবর্তন করতে পারে বলে মনে করেন মার্কিন সামরিক কর্তা।
তিনি বলেন ভারত এখনও হয়তো তাদের নন-অ্যালাইনড পলিসি বদলাবে না কিন্তু ক্রমশই কোয়াডের বাকি দেশ, অর্থাৎ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের সঙ্গে নিজেদের বোঝাপড়া বৃদ্ধি করবে। তাঁর এই ভাবনাকে স্বাগত জানান মার্কিন সেনেটররা। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বোঝাপড়া হবে বলেও মনে করেন অ্যাডমিরাল ডেভিডসন।