ভোটের আগে পুরনো ‘অস্ত্র’ নিয়ে মাঠে নামল গুজরাটের বিজেপি সরকার। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রণয়ন নিয়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিল গুজরাট। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহারে সেই বিধি প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি।
শনিবার গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সংঘাভি ঘোষণা করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে আজ রাজ্যের মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন (গুজরাটের) মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল। রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রণয়নের জন্য একটি কমিটির গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন গুজরাটের শিক্ষামন্ত্রী জিতু ভাগওয়ানি। তিনি বলেন, 'আমি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। অভিন্ন দেওয়ানি বিধিতে সকলের সমানাধিকার নিশ্চিত হয়। রাজ্যবাসী এটাই চাইতেন এবং তাঁদের দাবি মতো আমরা (অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রণয়নের জন্য একটি কমিটির গঠনের) সিদ্ধান্ত নিয়েছে।' সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মন্ত্রী পুরষোত্তম রুপালা জানিয়েছেন যে সেই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি। সেইসঙ্গে থাকবেন আরও তিন-চারজন সদস্য।
রাজনৈতিক মহলের মতে, আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করতে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি সরকার। যা বিজেপির প্রচারের বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। যে ভোটের নির্ঘণ্ট আগামী সপ্তাহেই ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন মিটে গেলেই গুজরাটে ভোট হবে। উল্লেখ্য, গুজরাটের পাশাপাশি বিজেপি শাসিত হিমাচল ও উত্তরাখণ্ড অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রণয়নের ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: ‘কোনও মুসলিম মহিলা চান না যে তাঁর স্বামী…’, UCC নিয়ে বিস্ফোরক হিমন্ত
উল্লেখ্য, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রণয়ন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়। তিনি দাবি করেছিলেন, বিভিন্ন ধর্মের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়ম আছে। তাতে সব ধর্মের মহিলারা সমানাধিকার থেকে বঞ্চিত হন। সব ধর্মের মহিলাদের সমানাধিকারের দাবিতে সেই মামলা দায়ের করেছিলেন। সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেছিলেন, বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বিভিন্ন ধর্মের নিয়ম মেনে চললে দেশের ঐক্য বিনষ্ট হতে পারে।
আরও পড়ুন: Goa: হিন্দুরা একাধিক বিয়ে করতে পারেন গোয়ায়? পর্তুগিজ সিভিল কোড কি প্রয়োগ হয়?
সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা পেশ করে কেন্দ্র দাবি করেছিল, শুধুমাত্র সংসদের হাতে কোনও বিধি বা আইন প্রণয়নের ক্ষমতা আছে। আইন প্রণয়নের কোনও নির্দেশ দিতে পারে না বাইরের কোনও কর্তৃপক্ষ। শুধু আইনসভার হাতে কোনও আইন বা বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা আছে।