কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া থেকে অব্যাহতি না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখলেন লোক সভায় দলের সভানেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তাঁর মতে, একমাত্র সনিয়া অথবা রাহুল গান্ধীর হাতেই দলীয় নেতৃত্ব সুরক্ষিত থাকতে পারে।
চিঠিতে সংগ্রেস কার্যনির্বাহী সভাপতি সনিয়া গান্ধীর উদ্দেশে অধীর লিখেছেন, ‘কংগ্রেস দলের নেতৃত্বে আপনার প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ ও অটল আস্থা রয়েছে। জানি আপনি সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। তবু আপনার কাছে আমাদের বিনীত আবেদন, আমাদের নেতৃত্ব দেওয়া থেকে অব্যাহতি দেবেন না। কংগ্রেস দলের নেতৃত্ব একমাত্র আপনি বা রাহুলজির হাতেই নিরাপদ। আর কেউ এই পদের প্রতি সুবিচার করতে পারবেন না।’
চিঠিতে অধীর আরও লিখেছেন, ‘খুবই কঠিন সময়ে আপনি কংগ্রেসের লাগাম ধরেছিলেন এবং সেই চরম দুঃসময়ে আপনার দেখানো পথেই ইউপিএ সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন হয়েছিল। নিরন্তর আক্রমণ ও অপমানের শিকার হয়েও আপনি নিজের আত্মমর্যাদা বজায় রেখেছেন এবং দল ও দেশের জন্য পরিশ্রম করে গিয়েছেন। সরকারকে নেতৃত্ব দিতে মনমোহন সিংকে পাশে নিয়ে নীরবে অথচ সুশৃঙ্খল ভাবে আপনি কাজ করে গিয়েছেন ভারতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে।’
সনিয়া গান্ধীর কংগ্রেসের সভাপতি পদে থাকার গুরুত্ব সম্পর্কে সবিস্তারে ব্যাখ্যা করে রবিবার টুইট করেন রাজস্থানের মুখ্যম ন্ত্রী অশোক গেহলটও। তাঁর মতে, কংগ্রেসের এই সংকটকালে দলের হাল ধরে রাখতে পারেন সনিয়াই। ইতিমধ্যে বেশ কয়েক জন শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতা চেয়ার পার্সন সনিয়া গান্ধীকে দায়িত্বে থাকার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন বলেও জানান গেহলট।
তিনি জানিয়েছেন, গণতন্ত্রের রক্ষকের ভূমিকায় বার বার অবতীর্ণ হয়েছেন সনিয়া। তাঁর নেতৃত্বেই দেশের ক্ষমতার সিংহাসনে বসে ইউপিএ, মনে করিয়ে দিয়েছেন বর্ষীয়ান নেতা। তবে শারীরিক কারণে নিতান্তই যদি দায়িত্ব ছাড়েন নেত্রী, তবে রাহুল গান্ধীকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দাবিও জানিয়েছেন গেহলট।
আগামী সোমবার কংগ্রেস কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক। তার আগে দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে অন্তর্বর্তী মতানৈক্যের আভাস পাওয়া গিয়েছে স্বয়ং সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর বিবৃতিতে। সম্প্রতি কমিটির কয়েক জন সদস্য-সহ দলের ২৩ জন নেতা কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের একাধিক সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাঁচ পাতার চিঠি পাঠিয়েছেন সভানেত্রীকে। সেই চিঠিতে সনিয়া ও রাহুলের সমালোচনার পাশাপাশি নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্যের প্রশ্নও উঠেছে।