রুটিন ইস্তেহার প্রকাশ অনুষ্ঠান। কিন্তু সেখানেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের একটি ঘোষণায় শুরু হয়ে গেল হইহই। তিনি জানালেন ভোটে জিতলে বিহারের মানুষদের বিনামূল্যে করোনা টিকা দেবে রাজ্য সরকার। শুধু বিহারের জন্য এই প্রকল্প কেন, বাকিরা কি বানের জলে ভেসে এসেছে এই নিয়ে সরগরম হল দিল্লির রাজনীতি। যদিও বিজেপির তরফ থেকে যুক্তি খাড়া করার চেষ্টা করা হয়েছে আত্মপক্ষ সমর্থনে।
এদিন সীতারামন বলেন তাদের ইস্তেহারের প্রথমেই আছে বিনামূল্যে টিকাদানের প্রতিশ্রুতি। তারপরেই বিরোধীরা একে একে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিতে থাকেন। স্বাস্থ্যনীতির সঙ্গে রাজনীতি মিশিয়ে দিচ্ছে বিজেপি, বলে অভিযোগ করেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। টুইটারে রাহুল বলেন যে সবাই দেখে নিন আপনার রাজ্যে কবে ভোট, তখন আপনারা কোভিড টিকা পাবেন।
অন্যদিকে কংগ্রেস টুইটার হ্যান্ডেল বলে যে এতদিন তো পোলিও থেকে স্মলপক্স সবই বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। তাহলে কি এবার করোনার টিকার ক্ষেত্রে সেটি হবে না। অন্য রাজ্যের মানুষকে কি নিজেদের টাকা খরচ করে টিকা নিতে হবে, সেই প্রশ্ন করেছে কংগ্রেস।
অন্যদিকে ওমর আবদুল্লা প্রশ্ন করেছেন যে এই টিকার খরচ কি বিজেপি নিজেদের পার্টি ফান্ড থেকে চোকাবে। করোনার ভয়কে বিজেপি ব্যবহার করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
বিহারের প্রধান বিরোধী দল আরজেডি বলে যে করোনা টিকা সারা দেশের, শুধু বিজেপির নয়। টিকার রাজনৈতিক ব্যবহার এটা সাফ করে দেয় যে বিজেপি এখন অসুখ ও মৃৃত্যুর ভীতি ছড়াচ্ছে, বলে অভিযোগ তেজস্বীর দলের। তাঁরা বলে যে বিহারের মানুষের আত্মমর্যাদা আছে, অল্প টাকার জন্য তারা নিজেদের আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যত বেচে দেবে না।
সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন যে এই ঘোষণার ফলে নির্বাচনী আচারবিধি লঙ্ঘন হয়েছে। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব সব ভারতীয়র কাছে কোভিড টিকা পৌঁছে দেওয়া। কেন এই বিষয়ে নিজে থেকে নির্বাচন কমিশন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না, সেই প্রশ্নও করেন তিনি।
তবে এই সিদ্ধান্ত সঠিক বলে দাবি বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালভিয়ার। তাঁর কথায়, কেন্দ্র নামমাত্র মূল্যে রাজ্যদের প্রতিষেধক তুলে দেবে। এবার রাজ্যদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা জনগণের থেকে টাকা নেবে না বিনামূল্যে বিলি করবে। তিনি বলেন যে স্বাস্থ্য যেহেতু রাজ্যের বিষয়, বিহার বিজেপি ঠিক করেছে বিনামূল্যে দেবে করোনা টিকা। এর মধ্যে বিতর্ক খুঁজতে চাওয়া অনর্থক বলে তিনি জানান। তবে এই কথা বিরোধীরা মানবে, এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায় নি।