দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ৭৮ দিনের মাথায় ১ লক্ষ রোগীর সংখ্যা ছাড়াল। প্রথম ৫০,০০০ আক্রান্ত হয়েছিল ৫৫ দিনে, তার পরের ৫০ হাজার হল ২৩ দিনে। শেষ ২৫ হাজার রোগী সংক্রমিত হয়েছে গত পাঁচ দিনে। লকডাউন চারে দেশব্যাপী বিধিনিষেধ কমিয়ে দেওয়ায় ও পরিযায়ীদের বাড়ি ফেরার হিড়িকে এই সংখ্যা দ্রুত বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিন্তু তারমধ্যেও একটাই আশার আলো হল ভারতের কম মৃত্যুহার।
এখনও পর্যন্ত দেশে করোনায় ৩০৮১জন মানুষ মারা গিয়েছেন, যদিও এর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাশংশ কোমর্বিডিটির শিকার, অর্থাত্ তাদের অন্য কোনও গুরুতর রোগও ছিল। তবে ভারতে মৃত্যুহার ৩.০৭ শতাংশ, যা বিশ্বের গড় করোনায় মৃত্যুর হারের অর্ধেকেরও কম। সারা বিশ্বে এখনও পর্যন্ত ৪৮ লক্ষ মানুষের করোনা সংক্রমণ হয়েছে। মারা গিয়েছেন তিন লাখের অধিক। অর্থাত্ মৃত্যুহার ৬.৫৭ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত আমেরিকার ক্ষেত্রে গড়ে ১০০ রোগীর মধ্যে ছয়জন করোনায় মারা যাচ্ছেন। চিনে মৃত্যুহার হল ৫.৫৬ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন লকডাউন ইত্যাদির মাধ্যমে করোনার কার্ভ ওঠার গতিকে তারা স্তিমিত করে দিয়েছেন। অনেক মডেল যা প্রেডিক্ট করেছিল, তার থেকে ভারতে সংখ্যা অনেক কম। তবে আগামী দিনে দেশে কত করোনা রোগী হবে সেই নিয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি। মূলত সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং বজায় রাখা, করোনা আক্রান্তের কাছে না যাওয়া খুবই প্রয়োজন। যেসব পরিযায়ী বাড়ি ফিরছেন, তাদের মধ্যে কতজন আক্রান্ত, সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ মোট সংখ্যার নিরিখে, বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
বিশেষজ্ঞদের মতে যেসব রাজ্যে কেসের সংখ্যা বেশি, সেগুলির ওপর এখন বেশি করে জোর দেওয়া দরকার। যেহেতু বাধানিষেধ শিথিল করা হয়েছে, আগামী কয়েক সপ্তাহ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা দেখতে হবে যে আদৌ করোনা কার্ভ চ্যাপ্টা হচ্ছে না ক্রমশ তা তুঙ্গে চড়ছে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের মতে সংক্রমণের হার এখন ০.৯৮। ১-এর কম হার থাকলে সেটা ইঙ্গিতবাহী যে গুণিতক হারে বাড়ছে না আক্রান্তের সংখ্যা। তবে এই হার ০.৭ শতাংশ করার প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
আপাতত দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে ১৩.৭ দিনে। সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে আগামী দিনে এই ডবলিং রেট বৃদ্ধি করা সম্ভব কিনা, এখন সেটাই দেখার।