হরিয়ানা-পঞ্জাব সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষকদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইন বা এনএসএ-র অধীনে মামলা রুজু করার ঘোষণা করেছিল আম্বালা পুলিশ। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আম্বালার আইজিপি সিবাশ কবিরাজ ঘোষণা করলেন, 'কয়েকজন কৃষক নেতার বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। তবে সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হয়। এই আবহে পুলিশ জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় এই মামলাগুলি করবে না।' এর আগে পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছিল, আন্দোলনরত কৃষকদের সরকারের বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে কৃষকদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় মামলা না করার ঘোষণা করার পর আম্বালার আইজিপি বলেন, 'সব আন্দোলনকারী এবং কৃষক নেতার উদ্দেশে হরিয়ানা পুলিশের আবেদন, তারা যেন শান্তি বজায় রাখে এবং প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করে।' এর আগে আন্দোলনরত কৃষকদের ওপর ড্রোনে করে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছিল হরিয়ানা পুলিশ। যা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল।
এদিকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি হরিয়ানার খানাউরি সীমান্তে এক কৃষকের মৃত্যু হয় বলে জানা যায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, মৃত কৃষকের নাম, শুভ করন সিং। জখম অবস্থায় তাঁকে পাতিয়ালার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, সেই কৃষকের গায়ে বুলেটের দাগ দেখা গিয়েছে। তবে হরিয়ানা পুলিশ এই ঘটনাটিকে 'গুজব' বলে আখ্যা দিয়েছিল প্রাথমিক ভাবে। যদিও পরে পঞ্জাবের মুখ্য়মন্ত্রী ভগবন্ত মান অবশ্য এই মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এদিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আরও অন্তত ২৬ জন কৃষক আহত বলে দাবি করা হয়। এই আবহে দু'দিনের জন্য 'দিল্লি চলো' অভিযান স্থগিত করা হয়।
এর আগে গত রবিবার কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেই বৈঠকেই কেন্দ্রের তরফ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই সব প্রস্তাব খারিজ করে দেন কৃষকরা। তাতেই নাকি 'অবাক' হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। উল্লেখ্য, তুলো, ডালের মতো বেশ কিছু ফসলের ওপর পাঁচ বছরের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রদানের একটি ব্যবস্থার কথা প্রস্তাব করেছিল সরকার। কেন্দ্রের বক্তব্য, এই সব ফসলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন কৃষকরাই। এই আবহে কৃষক সংগঠনগুলি এই দাবি খারিজ করায় নাকি তারা অবাক হয়। পরে বুধবারের ক্যাবিনেট বৈঠকে আখের 'ন্যায্য পারিশ্রমিক মূল্য' বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এতে কৃষকদের ক্ষোভ কতটা শান্ত হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।