কুতুব মিনার চত্বরে অবস্থিত মুঘল মসজিদ নিয়ে প্রায় ১০৯ বছরের পুরনো রেকর্ড তলব করল দিল্লি হাইকোর্ট। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াকে এই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। ১৯১৪ সালে কুতুব মিনার চত্বরে অবস্থিত মসজিদকে সংরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। উল্লেখ্য, সম্প্রতি কুতুব মিনার কমপ্লেক্সে অবস্থিত এই মুঘল মসজিদে নমাজ আদায়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তারপরেই এ নিয়ে মামলা হয় দিল্লি হাইকোর্টে। মামলাটি ওঠে বিচারপতি প্রতীক জালানের বেঞ্চে।
আরও পড়ুন: ‘আমার পূর্বপুরুষের জমিতে তৈরি কুতুব মিনার’, দাবি ব্যক্তির, কী বলল আদালত?
গত বছরের ১৩ মে এএসআই ওই মসজিদে নমাজ পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।তারপরেই মসজিদের ম্যানেজিং কমিটির তরফে এই মামলা দায়ের করা হয়। দিল্লি ওয়াকফ বোর্ড কর্তৃক নিযুক্ত মসজিদের ম্যানেজিং কমিটি ২০২২ সালে এই মামলা দায়ের করে। কমিটি ওই সিদ্ধান্তকে বেআইনি ও স্বেচ্ছাচারী বলে অভিযোগ তোলে। সেই সংক্রান্ত মামলায় আদালত এএসআইকে সারা দেশে সমস্ত সুরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভে কোনও উপাসনা অনুমোদিত নয় সেই সম্পর্কে নীতি স্পষ্ট করতে বলেছে। আদালতের বক্তব্য, বিভিন্ন ধর্মের জন্য বিভিন্ন স্মৃতিস্তম্ভের জন্য আলাদা নিয়ম থাকতে পারে না। তাই এনিয়ে এএসআইকে নীতি স্পষ্ট করা প্রয়োজন।
ম্যানেজিং কমিটির পক্ষে উপস্থিত আইনজীবী এম সুফিয়ান সিদ্দিকি দাবি করেছেন, যে মসজিদটি সংরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভের মধ্যে পড়ে না। তিনি আরও দাবি করেন, মসজিদটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত বছরের ১৩ মে পর্যন্ত সেখানে নমাজ পড়া হচ্ছিল। তবে কর্তৃপক্ষ আচমকা এটি বন্ধ করে দিয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির তরফে আদালতে যুক্তি দেওয়া হয়, মসজিদ একটি সংরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ হলেও প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান ও অবশেষ আইন, ১৯৫৮-এর ১৬ ধারায় বলা হয়েছে, যে মসজিদের ধর্মীয় পবিত্রতা বজায় রাখা এবং প্রার্থনা করার অধিকার হিসাবে মসজিদের সুরক্ষা এবং উপাসনার অধিকার রক্ষা করা কর্তৃপক্ষের বাধ্যতামূলক দায়িত্ব।
বিচারপতি বলেন, সমস্তপক্ষের আইনজীবীরা সকলেই নিজেদের পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। আগামী ১৩ অক্টোবর বিষয়টি তালিকাভুক্ত করেছেন বিচারপতি। সিদ্দিকির যুক্তি এবং এএসআইয়ের কৌঁসুলির যুক্তি শোনার পর বিচারপতি জালান বলেন, ‘মসজিদটি ২৪ জানুয়ারি ১৯১৪ সালে জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সংরক্ষিত কি না তা এখন আদালতের বিবেচ্য বিষয়।’ তার ভিত্তিতে আদালত এএসআইকে ওই পুরনো রেকর্ড জমা দিতে বলেছে।