কোভিড ভ্যাক্সিনের অব্যর্থ ডোজ ঠিক করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী ব্যাখ্যা দিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। টিকা উৎপাদক সংস্থার দুই অংশীদারের মধ্যে এমন মতান্তরে বিভ্রান্তি ছড়াল।
ভ্যাক্সিন ডোজ নির্ধারণের প্রক্রিয়া নিয়ে বয়ানের ফারাক প্রথম নজরে পড়ে সংবাদসংস্থা রয়টার্স-এর। বিতর্কের কেন্দ্রে শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী স্বল্প কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক, যাঁদের অর্ধেক ডোজ টিকা দেওয়ার পরে সম্পূর্ণ ডোজ দেওয়া হয়। প্রথমে যদিও তাঁদের দুটি সম্পূর্ণ ডোজ দেওয়ারই কথা ছিল।
ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা গিয়েছে, অর্ধেক ডোজের টিকা ভাইরাস প্রতিরোধে ৯০% সফল এবং সম্পূর্ণ দুটি ডোজের টিকা সে ক্ষেত্রে ৬২% সফল।
১০ দিন অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান গবেষক রয়টার্স-কে জানান, না বুঝেই ট্রায়ালের প্রথম দফায় স্বেচ্ছাসেবকদের অর্ধেক ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যক্রমে সেই ডোজই মোক্ষম প্রতিষেধক হয়ে দেখা দিয়েছে বলে দাবি গবেষকদের।
সেই দাবি কিন্তু খারিজ করে দিয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী। সোমবার তিনি সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ভুল করে নয়, বিস্তারিত আলোচনার পরেই স্বেচ্ছাসেবকদের অর্ধেক ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছিল।
এ দিকে দুই অংশীদারের দুই রকম ব্যাখ্যায় এই কোভিড ভ্যাক্সিনের সাফল্যের দাবি নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর জেরে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন পাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি হল। একই সঙ্গে ওই টিকার প্রতি সাধারণের আস্থাতেও চিড় ধরল বলে তাঁদের ধারণা।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগ প্রতিরোধ ও সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের অধ্যাপক ইলিয়েনর রিলির মতে, ‘পরস্পরবিরোধী এই বয়ান নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। ভ্যাক্সিনের বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা গুরুত্বপূর্ণ, এবং আমাদের এমন কিছু করা উচিত না যাতে সেই বিশ্বাসের ভিত নড়ে যায়।’
মতান্তরের জেরে শেয়ারবাজারেও খেসারত দিতে হচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে। সম্প্রতি তাদের শেয়ারের দর প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থার তুলনায় বেশ কিছুটা পড়েছে।