গত কয়েকদিনের টানা শীতকালীন বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পাকিস্তান। ভূমিধসের পাশাপাশি ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ি, যার ফলে পাকিস্তান জুড়ে কমপক্ষে মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। এছাড়াও আহত হয়েছেন ৫০ জন। ভূমিধসে বন্ধ হয়ে গিয়েছে একাধিক রাস্তা। যারফলে পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে। পাকিস্তানে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া শীতকালীন বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর-পশ্চিমের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ।
আরও পড়ুন: লস্করের 'ছকবাজ' জঙ্গির মৃত্যু পাকিস্তানে, মুম্বই হামলার মূল চক্রী
প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের নৈসর্গিক সোয়াত উপত্যকা, খাইবার জেলা এবং অন্যান্য জায়গায় ভূমিধস এবং ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার ফলে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে বেশিরভাগই হল নারী এবং শিশু। অন্যদিকে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের বালুচিস্তান প্রদেশ। সেখানে উপকূলীয় শহর গোয়াদরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার ফলে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনী নৌকার সাহায্যে সেখানকার দুর্গতদের উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বালুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে প্রদেশটিতে ৭০০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরেও ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। সেখানেও হতাহতের খবর পাওয়া গিয়েছে।
পাকিস্তান এবং চিনের সংযোগকারী কারাকোরাম জাতীয় সড়কেও ধস নেমেছে। বৃষ্টি এবং বরফের কারণে সেখানে এই বিপর্যয়। সড়কের উপর থেকে ভূমিধসের ধ্বংসাবশেষ সরানোর জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে দুর্যোগ মোকাবেলা বিভাগ। সেখানে জরুরি ত্রাণ ও ভারী যন্ত্রপাতি পাঠানো হচ্ছে। এদিকে, খারাপ আবহাওয়ার কারণে প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের উত্তরে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ভারি বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েকজন পর্যটক সেখানে আটকে পড়েছিলেন। তারপরেই এমন নির্দেশ প্রশাসনের।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছরই পাকিস্তানে শীতের বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সাধারণত পাকিস্তানে শীতকালীন বৃষ্টি শুরু হয় নভেম্বরে। তবে এবার তা দেরিতে শুরু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি থেকে পাকিস্তানে শুরু হয়েছে শীতকালীন বৃষ্টি। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে পাকিস্তানে প্রবল বৃষ্টি এবং বন্যায় মৃত্যু হয়েছিল ১৭৩৯ জনের। ঘরছাড়া হয়েছিলেন প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ। কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল সেই বন্যায়।