বিদেশি শক্তির উস্কানিতেই সংসদে পাশ করানো হয়েছিল ১৯৮৬ সালের পরিবেশ সুরক্ষা আইন। কর্নাটক হাই কোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ (NHAI)।
কী ভাবে এই রকম একটি অভিযোগ দায়ের করা হল, সে সম্পর্কে অনুসন্ধান করে দেখতে NHAI চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছে দৃশ্যত অসন্তুষ্ট হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে, অভিযোগ দায়েরকারী আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
হাই কোর্টে জমা দেওয়া অ্যাফিড্যাভিটে NHAI জানিয়েছে, ‘সংসদে পরিবেশ সুরক্ষা আইন পাশ করানো হয়েছিল শুধুমাত্র পরিবেশ বাঁচাতে নয়, একই সঙ্গে বিদেশিশক্তির স্বার্থরক্ষা করতেও। বিদেশিশক্তির উস্কানিতে একাধিক এনজিও-ও এমন আবেদন জমা দিচ্ছে।’
অ্যজানা গিয়েছে, অ্যাফিড্যাভিটটি দাখিল করেন NHAI-এর বেঙ্গালুরু আঞ্চলিক দফতরের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আর বি পেকম। তিনি ওই আইন প্রণয়নের সঙ্গে ১৯৭২ সালের জুন মাসে স্টকহোমে রাষ্ট্রপুঞ্জের সামাজিক পরিবেশ সম্মেলনে ভারতের যোগদানের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেছেন। পেকমের অভিযোগ, ওই সম্মেলনের চাপেই পরিবেশ সুরক্ষা আইন পাশ করে সংসদ।
‘স্টেটমেন্ট অফ অবজেকশন’ শীর্ষক ওই অ্যাফিড্যাভিট দাখিল করা হয়েছে ইউনাইটেড কনজার্ভেশন মুভমেন্ট চ্যারিটেবল ট্রাস্ট নামে এক এনজিও-র আবেদনের জবাবে। ২০১৩ সালের ২২ অগস্ট কেন্দ্রীয় সরকারের একজিকিউটিভ অর্ডার অনুসারে ১০০ কিমির বেশি জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণে পরিবেশজনিত প্রভাব যাচাই করার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করে ওই সংস্থা।
এই ছাড়ের বিষয়টি উল্লেখ করেই পরিবেশ রক্ষা নিয়ে কাজসকরা এনজিও সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ সাজিয়েছে NHAI। অভিযুক্তের তালিকায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
দাখিল করা অভিযোগের বিষয়ে কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি অভয় ওকা এবং বিচারপতি শচীন শংকর মাগাডামকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ মন্তব্য করে, ‘সরকারি সংস্থার এ হেন আচরণে আমরা বিস্মিত। তারা আদালতকে বিশ্বাস করাতে চাইছে যে, পরিবেশ সুরক্ষা আইন প্রণয়নের গোটা প্রক্রিয়া বিদেশি শক্তির মদতে সম্পন্ন হয়েছে। এই আবেদনের জন্য NHAI-এর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।’
আদালত NHAI চেয়ারম্যানকে আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে অনুসন্ধান রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। ২ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।