ভারতে সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। কাশ্মীরের জইশ জঙ্গিদের উদ্দেশে সম্প্রতি এই বার্তা পাঠিয়েছে সংগঠনের দায়িত্বে থাকা কম্যান্ডার মুফতি রউফ আসগর।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জম্মুর নাগ্রোটায় বান টোল প্লাজায় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে সদ্য সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশকারী চার সন্ত্রাসবাদী খতমের পরেই এই বার্তা পাঠায় আসগর।
জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান তথা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী তালিকায় থাকা মেরুদণ্ডের দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত মাসুদ আজহারের ছোটভাই মুফতি আসগরের উপরেই বর্তমানে জঙ্গি সংগঠন পরিচালনার দায়িত্ব রয়েছে। পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুর থেকে চার সন্ত্রাসবাদীকে সীমান্ত পার করে ভারতে পাঠানোর ছক তারই, জানিয়েছে গোয়েন্দা দফতর।
গত ১৯ নভেম্বরের সংঘর্ষে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই চার জঙ্গির প্রশিক্ষণের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছিল আসগর নিজে। সীমান্তে মাটির নীচে ২০০ মিটার যে সুড়ঙ্গ দিয়ে পাকিস্তানের শাকারগড় থেকে ভারতে প্রবেশ করে জঙ্গিরা, তার পিছনে থাকা কারিগরি দক্ষতা অবাক করেছে বিএসএফ আধিকারিকদের। চার জঙ্গির সঙ্গে ছিল ১১টি একে-৪৭ রাউফেল, তিনটি পিস্তল, ২৯টি হাত গ্রেনেড এবং গ্রেনেড লঞ্চার থেকে ছোড়ার উপযোগী আরও ৬টি শক্তিশালী গ্রেনেড।
গোয়েন্দাদের দাবি, জম্মু ও কাশ্মীরে বড় মাপের নাশকতার তারা বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলেও পরিকল্পনা করেছিল পাক জঙ্গিরা সংগঠন। বিশেষ করে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরেই বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসবাদীরা, দাবি করা হয়েছে গোয়েন্দা দফতরের রিপোর্টে।
শুধু জইশই নয়, নিয়ন্ত্রণরেখা সংগঠন পাকিস্তান ও ভারতের মাঝে থাকা নীলম উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদী হামলার ছক সাজাচ্ছে পাকিস্তানের আর এক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা, জানিয়েছে গোয়েন্দা রিপোর্ট। এর জন্য মুজাফ্ফরাবাদের চেলাবন্দি শিবির থেকে বাছাই করা হয়েছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গিদের। এ ছাড়া ভারতে নাশকতা ঘটাতে খাইবার-পাখতুনওয়া অঞ্চলে ওঘি এলাকায় গভীর জঙ্গলের ভিতরে ৪০০ জঙ্গিকে তালিম দিচ্ছে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন।
আবার শুধু পাকিস্তানই নয়, বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে সন্ত্রাস হামলার পরিকল্পনা করেছে জঙ্গি সংগঠন আল বদর। কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা নিরাপত্তার কড়াকড়ি হওয়ায় বিকল্প পথ খুঁজতেই বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছে এই সংগঠন।
গোয়েন্দা মহলের ধারণা, কাশ্মীরের উপরে নজর ঘোরাতেই ভারতের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের দ্বারা হামলার পরিকল্পনা করেছে পাক সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই।