দলের নির্দেশে রাজ্য থেকে কেন্দ্রে তহবিলের অর্থ সরানোর উদ্দেশেই মাত্র ৮০ ঘণ্টার জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন দেবেন্দ্র ফডণবীস। সোমবার এই বিস্ফোরক তথ্য জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি সাংসদ অনন্ত হেগড়ে।
এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের সমর্থন নিয়ে তড়িঘড়ি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে ফডণবীসের শপথগ্রহণ সম্পর্কে এ দিন সংবাদসংস্থা এএনআই-কে হেগড়ে জানান, রাজ্যের জন্য বরাদ্দ করা ৪০,০০০ কোটি টাকা কেন্দ্রের ঘরে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সারতেই ফডণবীস ওই পদক্ষেপ করেছিলেন।
হেগড়ের এই দাবি ফডণবীস স্বয়ং অস্বীকার করলেও এখনও পর্যন্ত নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাননি কর্নাটকের উত্তর কন্নড় কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ।
বিতর্কমূলক মন্তব্য করার ব্যাপারে অতীতেও সংবাদের শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছেন হেগড়ে। ২০১৬ সালে ইসলামের সহ্গে নাশকতার সম্পর্ক রয়েছে বলে তিনি বিতর্ক সৃষ্টি করেন। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, যত দিন ইসলামের অস্তিত্ব থাকবে তত দিনই বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ টিকে থাকবে। ঘৃণামূলক মন্তব্যের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে সংসদে অভিযোগ উঠেছিল।
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে হেগড়ের মন্তব্য ‘বিজেপি সংবিধান পরিবর্তন করবে’ ঘিরেও বিতর্কের ঝড় দেখা দেয়। সেই সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পদে আসীন ছিলেন হেগড়ে। তিনি দাবি করেছিলেন, সংবিধানের মুখবন্ধ থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বিষয়টি বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় শাসকদল।
ওই বছরই তাঁর পরিবারের সদস্যের চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে চিকিত্সকদের মারধর করেন আরএসএস সদস্য এই প্রাক্তন মন্ত্রী।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আন্তঃধর্মীয় বিয়ে নিয়ে হেগড়ে বলেন, ‘যে হাত কোনও হিন্দু মহিলাকে স্পর্শ করে, তার অস্তিত্ব থাকা উচিত নয়।’ সেই সঙ্গে কংগ্রেস নেতা দীনেশ গুন্ডু রাও ও তাঁর স্ত্রী টাবুর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ হানেন বিজেপি নেতা। তাঁর মন্তব্যের সমালোচনা করার জন্য এরপর তত্কালীন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন হেগড়ে।
বেফাঁস মন্তব্য করা থেকে দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের বিরত থাকতে বিজেপি নেতৃত্ব সতর্কবাণীর তোয়াক্কা না করে শবরীমালা মন্দিরে ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশ নিয়েও আলটপকা মন্তব্য করে বসেন কর্নাটকের সাংসদ। এই বিষয়টি নিয়ে কেরালা সরকারের পদক্ষেপকে তিনি ‘দিনের আলোয় ধর্ষণ’ বলে মন্তব্য করে নয়া বিতর্কের সূত্রপাত করেন। শুধু তাই নয়, বিরোধীদের ‘কাক, বাঁদর, শেয়াল ও গাধা’ বলেও তিনি অভিহিত করেন।
গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রাক্তন আইএএস আধিকারিক এস শশীকান্ত সেন্থিলকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে ফের বিতর্কে জড়ান হেগড়ে। তার আগে মে মাসে ভোপালের সাংসদ প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর নাথুরাম গডসেকে ‘দেশভক্ত’ বলে বিতর্ক তৈরি করলে তাতে ইন্ধন জোগান হেগড়ে। একাধিক টুইটের মাধ্যমে গডসের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা এবং বাকস্বাধীনতার মৌলিক অধিকার সম্পর্কে প্রথমে জোরদার সওয়াল করেও পরে বিতর্ক উচ্চগ্রামে পৌঁছলে সমস্ত টুইট মুছে দেন এই বিতর্কিত বিজেপি সাংসদ।