প্রিয়াঙ্কা দেব বর্মণ
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ থেকে শনিবার ত্রিপুরায় এল পণ্যবাহী জলযান। ওপারের মেঘনা নদী হয়ে ত্রিপুরার গোমতি নদীর মাধ্যমে ভারতের জাতীয় নৌপথে প্রবেশ করেছে নৌকাটি। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ থেকে ৫০ মেট্রিক টন সিমেন্ট নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এই যাত্রা শুরু হয়। আর শনিবার সেটি পৌঁছয় আগরতলা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়ায়।
এদিন সেখানে ওই পণ্যবাহী বড় নৌকাটিকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব ও বাংলাদেশে ভারতের হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস প্রমুখ।
বাংলাদেশের দাউদকান্তি থেকে ত্রিপুরার সোনামুড়ায় জলপথের এই রুট চলতি বছরের মে মাসে ইন্দো–বাংলাদেশ প্রটোকলের অন্তর্গত স্বীকৃতি পায়। বাংলাদেশে ভারতের হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস এবং বাংলাদেশের নৌপরিবহণ মন্ত্রাণালয়ের সচিব মহম্মদ মেজবাহউদ্দিন চৌধুরী নৌপথের এই নতুন চুক্তি সাক্ষরিত করেন।
বাংলাদেশের এক প্রশাসনিক সমীক্ষা অনুযায়ী, মোট ৯০ কিলোমিটারের এই দাউদকান্তি–সোনামুড়া রুটের ৮৯.৫ কিলোমিটার জলপথ বাংলাদেশের মধ্যেই পড়ে আর বাকিটা ভারতের অন্তর্গত।
জুলাই মাসেই এই নতুন আন্তর্জাতিক জলপথের জন্য গোমতি নদীতে একটি ভাসমান জেটি তৈরি করা হয়। সোনামুড়া থেকে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ বন্দরে জলযান পাঠাতে এবার ধাপে ধাপে গোমতী নদীর তীরে ড্রেজিংয়ের কাজ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে আমদানিকৃত পণ্যগুলি পরীক্ষা করতে একটি টার্মিনাল ভবনও তৈরি করা হচ্ছে।
এ বছর জুলাই মাসে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব বলেছিলেন, ‘এই প্রকল্পটি ইন্দো-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পক্ষে লাভজনক হবে। এর জেরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম মূল বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে ত্রিপুরা। তাঁর অনুমান, এই প্রকল্প গড়ে উঠলে রাজ্যে রপ্তানির পরিমাণ ৩০ কোটি থেকে বেড়ে ৪০০ কোটি হয়ে যাবে এবং বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি করা হবে। বর্তমানে, ত্রিপুরায় ৬৪৫ কোটি টাকার পণ্য আমদানি করা হয়।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ত্রিপুরা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিসের সভাপতি এম এল দেবনাথ বলেন, ‘গোমতী নদীর মতো একমুখী নদীগুলিতে জোয়ারের উঁচু ঢেউ বা সারা বছর জুড়ে প্রচুর পরিমাণে জল থাকে না। বর্ষাকাল ছাড়া যথাযথ ড্রেজিং করলে বছরে কমপক্ষে ৬ মাস এই রুটটি চালু রাখা যাবে। এটি যেহেতু প্রথমবারের চেষ্টা তাই আমরা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।’