প্রথমে বাধা দিলেও শেষ পর্যন্ত প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও নেতা রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেস নেতাদের হাথরস যাওয়ার অনুমতি দিল উত্তর প্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ।
শনিবার দুপুরে হাথরসে গণধর্ষণ ও চূড়ান্ত ষশারীরিক নিগ্রহে নিহত দলিত তরুণীর বাড়ি গিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি থেকে রওনা দেন প্রিয়াঙ্কা, রাহুল, অধঝীর রঞ্জন চৌধুরী, শশী থারুর-সহ প্রায় ডজন খানেক শীর্ষ স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদ।
নয়াদিল্লির কংগ্রেস সদর দফতর থেকে রওনা হওয়ার সময় প্রিয়াঙ্কা জানান, পুলিশ বাধা দিলেও যে কোনও উপায়েই হোক তাঁরা দলিত পরিবারটির সঙ্গে দেখা করবেন। রাহুলকে পাশে বসিয়ে গাড়ি নিজেই চালান প্রিয়াঙ্কা। কিন্তু দিল্লি-নয়ডা সীমান্তে পৌঁছলে তাঁদের বাধা দেয় উত্তর প্রদেশ পুলিশ।
পুলিশের তরফে বলা হয়, ১৪৪ ধারা জারি হওয়ার দরুণ কংগ্রেস নেতাদের হাথরসে যেতে দেওয়া যাবে না। উত্তেজিত রাহুল গাড়ি থেকে নেমে জানান, তিনি হেঁটেই হাথরস পৌঁছবেন। এই সময়ে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে কংগ্রেস সাংসদদের বাদানুবাদ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে ভিড় জমে যায়।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য পুলিশ জানায়, দলের মোট ৫ জন হাথরসে নিহত দলিত তরুণীর বাড়ি যেতে পারেন। এর পরেই রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, অধীর রঞ্জন চৌধুরী, কে সি বেণুগোপাল ও পি এল পুনিয়া হাথরসের উদ্দেশে ফের রওনা হন।
হাথরসে কংগ্রেস নেতাদের সফর পরিকল্পনা শোনামাত্র শনিবার সকাল থেকে দিল্লি-নয়ডা সীমান্ত থেকে গোটা পথজুড়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে উত্তর প্রদেশ প্রশাসন। রাহুলরা দিল্লি-নয়ডা ফ্লাইপাস ধরে টোল প্লাজার কাছে পৌঁছানোমাত্র পুলিশের বিশাল বাহিনী তাঁদের বাধা দেয়।
কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয় পুলিশকর্তাদের। উপস্থিত কংগ্রেস সমর্থকরা প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। এরই মাঝে গাড়ি থেকে নেমে পড় পুলিশকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা। পুলিশের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি ধরা পড়ে সংবাদ চ্যানেলের ক্যামেরায়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার গৌতম বুদ্ধ নগরে যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে তাঁদের গাড়ি থামিয়ে দেওয়ার পরেও হেঁটে হাথরসে যাওয়ার চেষ্টা করেন রাহুল। সেই সময় উত্তর প্রদেশ পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটির সময় কংগ্রেস নেতাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যান্য কংগ্রেস নেতাদেরও আটক করা হয় এবং তাঁদের বিরুদ্ধে মহামারী অসুখ আইনে অভিযোগ নথিভুক্ত হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিরোধী নেতাদের উপরে লাঠি চালিয়েছে পুলিশ।
হাথরসে দলিত কন্যার মৃত্যুর তদন্তে নেমে উলটে নিগৃহীতার পরিবারের সঙ্গে সংবাদমাধ্যম ও বহিরাগতদের ফোনালাপে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। এ দিন সকাল থেকে হাথরসের বুলগাড়ি গ্রাম ও সংলগ্ন অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
এ দিকে, দলিত তরুণীর মৃত্যু ঘিরে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হওয়ায় তড়িঘড়ি বুলগাড়ি গ্রামে গিয়ে নিগৃহীতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন বিজেপি নেতারা।