আদানি গ্রুপের যত ধাক্কা খাচ্ছে, তত কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে আমজনতার। কারণ অনেকেই যে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) এবং জীবন বিমা নিগমে (এলসিআই) টাকা গচ্ছিত রাখেন, সেই দুই সংস্থার সঙ্গে আদানির যোগ আছে। আদানি গ্রুপকে বড় অঙ্কের ঋণ দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আবার আদানি গ্রুপে বিনিয়োগ আছে এলআইসির। সেই উদ্বেগের মধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আশ্বাস দিলেন, এখনও আদানি গ্রুপে টাকা ঢেলে লাভ করছে এলআইসি এবং এসবিআই।
গত মাসে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার থেকে আদানি গ্রুপের যে শনির দশা শুরু হয়েছে, তারপর থেকে শুক্রবার প্রথম মুখ খোলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। নিউজ১৮-র সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সীতারামন বলেন, 'আদানি নিয়ে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) এবং জীবন বিমা নিগমের (এলআইসি) বিস্তারিত বিবৃতি জারি করেছে। আদানি (গ্রুপে) ওরা বেশি টাকা ঢালেনি। ওরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে অনুমোদিত সীমার মধ্যেই ওরা টাকা ঢেলেছে এবং লাভজনক অবস্থায় আছে।'
এসবিআইয়ের তরফে কী বলা হয়েছিল?
সংবাদসংস্থা ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাম গোপন রাখার শর্তে এক ব্যক্তি জানিয়েছেন যে আদানি গ্রুপের বিভিন্ন সংস্থায় এসবিআইয়ের ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ আছে। যদিও শুক্রবার ভারতের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এসবিআইয়ের চেয়ারম্যান দীনেশ খারা দাবি করেছেন, আদানি গ্রুপে সার্বিকভাবে ২৭,০০০ কোটি টাকা ঢেলেছে এসবিআই। যা রাষ্টায়ত্ত ব্যাঙ্কের মোট মূলধনের ০.৮৮ শতাংশ।
এলসিআইয়ের তরফে কী বলা হয়েছিল?
একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, আদানি গ্রুপের শেয়ারে ধস নামার ফলে জোরদার ধাক্কা খেয়েছে এলআইসি। গত ৩০ জানুয়ারি এলআইসির তরফে বিবৃতিতে দাবি করা হয়, আদানি গ্রুপে যে পরিমাণ টাকা ঢেলেছে এলআইসি, তা মোট বিনিয়োগের এক শতাংশেরও কম। যে অঙ্কটা ৩৬,৪৭৪.৭৮ কোটি টাকা।সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আদানি এন্টারপ্রাইজের ফলো-অন পাবলিক অফারিংয়ে (এফপিও) বিনিয়োগ করেছিল এলআইসি। যদিও সেই এফপিও তুলে নিয়েছে আদানি এন্টারপ্রাইজ। টাকা ফিরিয়ে দেওয়া বলেও জানিয়েছে।
কেন আদানি শেয়ার বাজারে ধাক্কা খাচ্ছে?
গত ২৪ জানুয়ারি মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের তরফে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে কারচুপি এবং আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ তোলা হয়। তারপর থেকেই আদানি গ্রুপের সাতটি শেয়ারে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। আদানি গ্রুপের তরফে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও আদানি গ্রুপের শেয়ারের পতন অব্যাহত থাকে। আজ সকাল পর্যন্ত তো আদানি গ্রুপের মূলধন ১০ লাখ কোটি টাকা 'সাফ' হয়ে গিয়েছে। যা অর্ধেকেরও বেশি।
তবে ওই সংবাদমাধ্যমে সীতারামন বলেন, ‘আগের মতোই ভারতের আর্থিক বাজার খুব ভালোভাবে পরিচালিত হয়। স্থিতিশীল সরকার আছে ভারতে। ভারতের আর্থিক বাজারও খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়।’
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)